পতাকা উড়ল, হরতাল ডাকার দিনে গুলিবিদ্ধ ৫০
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
২ মার্চ, ১৯৭১। এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল থেকেই মিছিল ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়মুখী। নিউমার্কেটের মোড় থেকে নীলক্ষেতের সড়ক দিয়ে পাবলিক লাইব্রেরি পর্যন্ত যার বিস্তার।
এদিন বটতলায় ওড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। সমাবেশ শেষে বিশাল এক মিছিল রড ও লাঠি উঁচিয়ে ঢাকা শহর প্রদক্ষিণ করে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এদিন থেকে পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তান কথাটা একরকম হাওয়া হয়ে যায় বাঙালিদের মুখ থেকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সন্ধ্যায় তার প্রেস কনফারেন্সে বারবার বাংলাদেশ উচ্চারণ করেন।
ঢাকা শহরে ছিল হরতাল। স্কুল-কলেজ, কল-কারখানা সব ছিল জনশূন্য, কোনো অফিসে কাজ হয়নি। লোকসমাগম বলতে রাস্তায় এবং প্রতিবাদ সমাবেশে। সারাদিন একটি ট্রাকে করে আওয়ামী লীগের সদস্যরা সবাইকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান। বারবার স্মরণ করিয়ে দেন এটিই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ।
সারা শহরে সরকারের পেটোয়া বাহিনী হরতাল ঠেকাতে মাঠে নামে। পঞ্চাশ জনের মতো গুলিবিদ্ধ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। যাদের বেশিরভাগই তেজগাঁও এলাকার। তেজগাঁও পলিটেকনিক স্কুলের ছাত্র আজিজ মোর্শেদ ও মামুনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর আজিজ মারা যান।
সামরিক আইন প্রশাসকের তরফে এদিন কারফিউ জারি করা হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত এই কারফিউ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যাতে নিরস্ত্রদের ওপর গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা করা হয়। ৩ মার্চ থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে অর্ধদিবস (ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা) হরতালের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু।
পরদিন ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে বৈঠক শেষে পল্টনে এক সমাবেশের ঘোষণা দেন তিনি।