মিজান মালিক এর জন্মদিন আজ

বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব )-এর সভাপতি, দৈনিক যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মিজান মালিক এর জন্মদিন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার ছাত্র মিজান মালিক একজন পেশাদার সাংবাদিক। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় তিনি একটি ধারা তৈরি করেছেন। আর শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনে তিনি একজন গীতিকবি হিসেবে বেশ পরিচিত। তাঁর অসংখ্য গান দেশের বড় শিল্পীদের মুখে মুখে। গানের জন্য তিনি ২০০৬ সালে বাচসাসস পুরস্কারও পান। সাংবাদিকতায় রাষ্ট্রীয় পুরস্কারসহ রয়েছে অসংখ্য অর্জন। তাঁর মূলভাবনায় বেসরকারি টেলিভিশনে একাধিক নাটকও সম্প্রচারিত হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃক তিনি দেশের সবচেয়ে বড় পুরস্কারটি পান ২০১৫ সালে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই পুরস্কার প্রদান করেন। ‘‘যোদ্ধা৭১” শিরোনামে যমুনা টেলিভিশনে (৩৬০ ডিগ্রি) সম্প্রচারিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি।
একই বছর শিক্ষা বিষয়ক অনুসন্ধানী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় সেরা প্রতিবেদনের জন্য মিজান মালিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পুরস্কার পান। তার প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিলো “দশ দিনের বিবিএ পাশ”। কিভাবে একজন শিক্ষার্থী কিভাবে পড়াশোনা না করে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দশ দিন ঘোরাঘুরি করে বিবিএ’র সার্টিফিকেট পেয়ে গেলেন নিবীড় অনুসন্ধানে তা বেরিয়ে আসে। প্রতিবেদন সম্প্রচারের পর ওই বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিবেদনটি যমুনা টেলিভিশনে (৩৬০ ডিগ্রি) সম্প্রচারিত হয়েছিল।
এমএলএম ব্যবসার নামে জালিয়াতি নিয়ে শ্রেষ্ঠ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের তিনি জন্য ২০১২ সালে দুদকের প্রথম মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পান। এ ছাড়াও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় সেরা অর্জনের জন্য তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) ও ক্র্যাবসহ অনেকগুলো সংস্থা থেকে পুরস্কার অর্জন করেন। নারী ও শিশু বিষয়ক সেরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য তিনি ডিআরইউ পুরস্কার পান।
মিজান মালিক জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য। ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক গঠিত অনুষ্ঠান উদযাপন ও সাংস্কৃতিক উপকমিটির সদস্য তিনি। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোটার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) এর স্থায়ী সদস্য। তিনি এর আগে ক্র্যাব এর সহসভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক ও কার্য নির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তার উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে গঠিত হয় “রিপোর্টার্স এ্যাগেইনস্ট করাপশন (RAC)। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন “ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম’ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। এ ছাড়া “ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরাম”এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
ছাত্রজীবন থেকে ছোট গল্প, কবিতা ও গান লেখালেখি করলেও অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবে মিজান মালিক-এর তৃতীয় একটি নয়ন খুলে যায়। যা বলা যায় না বা অব্যক্ত থেকে যায়, এমন অসংখ্য ঘটনা তাঁর মনে রেখাপাত করে। মন কখনো ব্যথাতুর হয়ে ওঠে। সেইসব অদেখা, অজানা অনেক গল্প নিয়ে তাঁর লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ “গল্প ছাড়া মলাট” ২০২০ সালের একুশে গ্রন্থ মেলায় আসে। কবিতায় ওঠে আসে প্রেম, দ্রোহ, হতাশা, বিষণ্নতা, সামাজিক নানা সংকট, টানাপড়েন ও অপ্রাপ্তির চিত্রও শৈল্পিকভাবে উঠে এসেছে তাঁর কবিতায়। এ ছাড়া একটি তথ্যানুসন্ধানমূলক গ্রন্থও রয়েছে তাঁর। টেলিভিশন ও পত্রিকাÑ দুই মাধ্যমে সাংবাদিকতায় রয়েছে তাঁর বেশ অভিজ্ঞতা। যমুনা টেলিভিশনের ‘থ্রি-সিক্সটি ডিগ্রি’ জনপ্রিয়তা পেয়েছে তাঁর হাত ধরেই। তিনি দৈনিক যুগান্তরে ইনভেস্টিগেশন এডিটর ও বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
বিশ্বজুড়ে অদৃশ্য ভাইরাস করোনাকাল শুরু হলে বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়ে। বাংলাদেশে এর ঢেউ আছড়ে পড়ে মার্চের প্রথম সপ্তাহে। বিশ্ব পড়ে লক-ডাউনের আওতায়। পবিত্র কাবা ঘরও বন্ধ হয়ে যায়। এই করুণ অবস্থায় দেশে করোনা থেকে মুক্তি চেয়ে “প্রার্থনা” শিরোনামে তিনি প্রথম একটি সঙ্গীত রচনা করেন। এরপর তিনি লিখেন “আরাধনা” নামে আরেকটি গান। করোনা থেকে নিজেকে ও পাশের কাছের মানুষকে সর্বোপরি দেশকে রক্ষায় তিনি তৈরি করেন সচেতনতামূলক গান “বদলে যাই”। করোনায় মানবিক ও অমানবিক দুই ধরণের মানুষের দেখা পাই আমরা। এ বিষয়টিকে নিয়ে “শখের মানুষ” শিরোনামে তিনি তৈরি করেন আরেকটি গান। মানুষকে কোনো ধরণের মতবাদে বিভক্ত করে তাঁকে অধিকার থেকে যেনো বঞ্চিত না করা হয় সেই মানবিক আবেদন রয়েছে তাঁর “মতবাদ” শরোনামে গানে। এসব গান গেয়েছেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী রবি চৌধুরী, সুমন রাহাত, খালেদ মুন্না, প্রীতম, অভি..। এর আগে তাঁর অসংখ গান দেশের নামিদামি শিল্পীরা গেয়েছেন। মমতাজ এমপি, এন্ড্রো কিশোর, বিপ্লব, সুমন রাহাত, ফকির শাহাবুদ্দিন, সোহেল মেহেদী,কলকাতার শিল্পী সোনালী চৌধুরীসহ অনেকে।
মিজান মালিক ১৯৭৩ সালের ৫ ফেব্রয়ারি চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। সাংবাদিকতা শুরু দৈনিক ভোরের কাগজ-এর মাধ্যমে। এরপর বাংলাবাজার পত্রিকা, মুক্তকণ্ঠ, মানবজমিন-এ বেশ কয়েক বছর কাজ করেন।
বিডি ফিনান্সিয়াল নিউজ২৪.কম এর পক্ষ থেকে মিজান মালিককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।