আড়াই বছরে ক্লাস নেননি, শিক্ষার্থীরাও চেনে না

মোঃ রাজু খান (ঝালকাঠি):
ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রভাতি শাখার ইনচার্জ ছিলেন সহকারী প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা আরজু। যোগদানের পর আড়াই বছরেও ক্লাস নেননি, শিক্ষার্থীরাও তাকে চেনে না, নামও জানে না। অনেক শিক্ষকও তাকে বিদ্যালয়ে কখনো দেখেনি। এই শিক্ষককেই বদলি করা হয়েছে ঝালকাঠি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদশূন্য, তাকেই নিতে হবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব। ২৯ মার্চ তাকে বদলি করা হলেও ১৪ দিন পরে তিনি যোগদান করেন। যে শিক্ষক তঁার আগের কর্মস্থলে ঠিকমত উপস্থিত ছিলেন না, তাকেই আবার দেওয়া হচ্ছে আরেকটি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব। এতে শঙ্কিত ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষর্থীরা। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরাও।
জানা যায়, ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ সাহা ২০১৯ সালে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেলে পদটি শূূন্য হয়। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেন সহকারী শিক্ষক আবু সাঈদ মো. ফরিদ হোসেন। চলতি বছরের শুরুতেই সিরাজ সিকদার নামে একজন সহকারী শিক্ষক যোগদান করেন এ বিদ্যালয়ে। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়া কথা থাকলেও তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ফরিদ হোসেনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালকের কার্যালয়ের দ্বারস্ত হলেও কোন সুফল পাননি সিরাজ সিকদার। জোর করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন ফরিদ হোসেন। এ অবস্থায় শিক্ষকরা পরেন বিপাকে। দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় শিক্ষকরা। কেউ সিরাজ সিকদারের পক্ষে কেউ আবার ফরিদ হোসেনের পক্ষ নেন। একে অপরের সমালোচনায় জড়িয়ে পড়েন। শহরের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা এ ঘটনায় ক্ষুব্দ। পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডিজি’র নির্দেশে ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ (বালক) বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা আরজুকে গত ২৯ মার্চ ঝালকাঠি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। নিয়মানুযায়ী নির্দেশের পরপরই তিনি কর্মস্থলে যোগদান করবেন। কিন্তু বদলির ১৪ দিন পরে তড়িঘড়ি করে তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়ে আবার ছুটি নিয়ে চলে যান।