কেঁয়াগড়: একটি বিচ্ছিন্ন গ্রাম

"

এম.এম.জাহিদ হাসান হৃদয় (আনোয়ারা,চট্টগ্রাম)

একপাশে কাঠের সেতু, আরেক পাশে ভাঙ্গা খন্দকে ভরা একটি রাস্তা। এই দু'য়ের মাঝে সীমাবদ্ধ আছে ৮নং চাতরী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড কেঁয়াগড়। উপজেলার মূল সড়ক থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে এটির অবস্থান। আর এই ১ কিলোমিটার সড়কটি এখনো যান চলাচলের উপযুক্ত নয়। প্রায় ৪ থেকে ৫ টা খন্দক পেরোতে হয় কেঁয়াগড় যাওয়ার পথে। এবং শেষমেশ ওয়াতারা ব্রীজ নামে খাটের সেতুটি মোটামুটি মানুষ চলাচল করার উপযুক্ত থাকলেও যান চলাচলের কথা ভাবায় যায়না। শীত-গ্রীষ্মে যেমন-তেমন ভাবে শিক্ষার্থীরা এক কাপড়ে এই রাস্তা দিয়ে স্কুল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারলেও বর্ষা কালে সব শিক্ষার্থীদের দুই জোড়া কাপড় নিয়ে ঘর থেকে বের হতে হয় এমন অভিযোগ গ্রাম বাসীর। কারণ স্কুল যাওয়ার পথের ৪/৫ টা খন্দকে কোনো কালবার্ট না থাকায় তা ভিজে পার হতে হয় সব শিক্ষার্থীদের। ছেলেদের কাছে বিষয় টা তেমন জটিল না হলেও মেয়েদের কাছে এটি হয়ে উঠে অত্যন্ত গুরুতর। তাই অল্প বয়সেই লেখা-পড়া ছেড়ে বিয়ের পিরিতে বসতে হয় বেশিরভাগ মেয়েদের। অপরদিকের চৌমুহনী বাজার কেন্দ্রীক রাস্তাটা অনেক বছর ধরে সংস্কারের উপযুক্ত হয়ে পড়লেও তা এখনো রয়েছে টেন্ডারের বাইরে। প্রায় ৭ হাজার মানুষের বসবাস এই কেয়াগড়ে যার সিংহভাগই হিন্দু গোষ্ঠী। এলাকার মানুষদের অভিযোগ হিন্দু গোষ্ঠী হওয়ায় কেয়াগড়ের দিকে নজর নেই সংশ্লিষ্টদের।

এই বিষয়ে নানা অভিযোগ তুলে কেয়াগড়ের বাসিন্দা মিটু দত্ত বলেন, আমরা বাঁচলেও আওয়ামী লীগ মরলেও আওয়ামী লীগ আমাদের উন্নয়ন করলেও আমরা আওয়ামী লীগ কে ভোট দিবো না করলেও আওয়ামী লীগকে ভোট দিবো। তাই আমাদের রাস্তা ঘাটের উন্নয়নের বিষয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই কারো। ছেলে-মেয়েদের বিয়ের বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ছেলের বাড়ি কেয়াগড় বললে কেউ মেয়ে দিতে চাই না, এমন অনেক বিয়ে ঠিক হওয়ার পরও ঘর-বাড়ি দেখতে আসার পর তা ভেঙে গেছে। লজ্জার বিষয় হলেও সত্যি যে, আমাদের ছেলেদের বিয়ে করার জন্য মাস দু'য়েক আগে থেকে শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়। শহরের বাসা দেখিয়ে আমাদের ছেলেদের জন্য বউ আনতে হয়। আর মেয়েদের বেলায় দিতে হয় কাঁড়ি কাঁড়ি যৌতুক।

এই বিষয় নিয়ে ৩নং কেয়াগড় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিকাস ঘোস বলেন,উপজেলা থেকে কেয়াগড় সড়ক বেয়ে ওয়াতারা ব্রীজ। এই সড়ক এবং ব্রীজকে ঘিরে অনেকবার ইন্জিনিয়ার আনা হয়েছে, এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দরখাস্তও পাঠানো হয়েছে। তবে বার বার মাপ নিয়ে যাওয়ার পরও রাস্তাটার টেন্ডার হচ্ছেনা। আর চৌমুহনী থেকে কেয়াগড় যাওয়ার সড়কটি ইতিমধ্যে টেন্ডার হয়েছে। চন্দনাইশের একটা কন্ট্রাক্টরকে কাজ দেওয়া হয়েছে কিন্তু কন্ট্রাক্টর এখনো কাজ শুরু করেনি।