বাংলাদেশের কৃষিখাতের ১১ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পেলো স্ট্যান্ডার্ডচাটার্ড-চ্যানেলআই অ্যাগ্রোঅ্যাওয়ার্ড ২০২৩

কৃষিক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ডচাটার্ড ব্যাংক ও বাংলা ভাষার প্রথম ডিজিটাল বাংলা টেলিভিশন চ্যানেলআই। এই দুই প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে এবার ৯ম বারের মতো দেয়া হলো স্যাান্ডার্ড চাটার্ড চ্যানেল আই অ্যাগ্রোঅ্যাওয়ার্ড।
শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সম্মানিত করার আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী জনাব মো.আব্দুর রহমান এমপি।
এবছর সর্বমোট ১1 টি ক্যাটাগরি তে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকেপুরস্কৃত করা হয়। আজীবন সম্মাননায় ভূষিতহন পথিকৃত কৃষিঅর্থনীতিবিদ ড. এম এ সাত্তারমণ্ডল। এছাড়া পুরস্কারে ভূষিত হন বছরের সেরা কৃষক (পুরুষ) মো. আবুল কালাম আজাদ, বছরের সেরা কৃষক (নারী) তানিয়া পারভীন, সেরা মেধাবী সংগ্রামী কৃষক (পুরুষ) মো. সিদ্দিক হোসেন, সেরা মেধাবী সংগ্রামী কৃষক (নারী) সাবিত্রী বিশ্বাস, পরিবর্তনের নায়ক মো. সানোয়ার হোসেন, সেরা জলবায়ু অভিযোজক ড. মৃন্ময় গুহনিয়োগী,সেরা কৃষি সাংবাদিক সাহানোয়ার সাঈদশাহীন, জুরি স্পেশালড. মো. আল-মামুন, সেরা কৃষি প্রতিষ্ঠান (সহায়তাও বাস্তবায়ন) আই ফার্মার, সেরা কৃষি প্রতিষ্ঠান (রপ্তানি) প্রাণডেইরি।
চার শতাধিক আবেদনের ভেতর থেকে বাছাই শেষে জুরিবোর্ড উল্লেখিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করেন। জুরি বোর্ডে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ। সদস্য ছিলেন কৃষি অর্থনীতিবিদ ও সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুলআলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, বাংলাদেশ কৃষিগবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার ,বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাজাহান কবির, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সাবেক উপাচার্য ড. গৌতম বুদ্ধদাশ এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা উইনরক ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র টেকনিক্যাললিড, ক্লাইমেটচেইঞ্জ জাকিয়া নাজনীন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুররেজা সাগরবলেন,‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে কৃষি ও কৃষক। কৃষি উৎপাদন থেকে কৃষি বাণিজ্য, অমিত সম্ভাবনার এক আলো প্রতিনিয়ত তারা ছড়িয়ে যাচ্ছেন, আমরা সেই আলোকচ্ছটা ছড়িয়ে দিতে চাই পুরো দেশে। যেন বিবর্তনের ধারাকে সংহতকরতে, টেক সইউন্নয়নের দিকে ধাবিত করতে নতুন প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হয়। স্ট্যার্ন্ডার্ড চার্টার্ডের সঙ্গে এ মহতিকার্য ক্রমে অংশ নিতে পেরে চ্যানেল আই সত্যিই আনন্দিত।’
স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আশঙ্কা করা হচ্ছে ২০৫০ সালের মধ্যে খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ ৩০% কমে যাবে।কৃষক এবং কৃষি খাতে সংশ্লিষ্টদের জন্য চ্যালেঞ্জ গুলো ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে।
এই চ্যালেঞ্জ গুলো কমাতে এবং টেকসই উন্নয়ন উপযোগী একটি পরিবেশ তৈরি করতে, আমাদের অবশ্যই নগরায়ন, ক্রমবর্ধমানতাপমাত্রা, পানিরদুষ্প্রাপ্যতা, লবণাক্ততাবৃদ্ধি, কৃষিকৌশলএবংপ্রাণিসম্পদলালন-পালনের মতো বিষয় গুলোকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় আনতে হবে।
এই বছরের অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীরা ঠিক এই কাজটিই করেছেন – তাদের প্রচেষ্টা ও উদ্ভাবনে প্রতিফলিত হয়েছে সময়ের প্রয়োজন।দেশের কৃষিখাতকে একটি টেকসই, সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে, দেশের কৃষিনায়ক এবং স্বপ্নদর্শীদের প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করতে, সর্বোপরি কৃষি সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে চ্যানেলআইয়ের সঙ্গে এধরনের কার্যক্রমে যুক্ত হতে পেরে আমরা গর্বিত।’
শুভেচ্ছা বক্তব্যে কৃষিউন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখসিরাজ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব সবচেয়ে বেশি বুঝতে পারছে কৃষকরা। আমি বিশ্বের নানা প্রান্তের কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, এটা মোকাবিলা করা কতোটা চ্যালেঞ্জের। উন্নত বিশ্বে কৃষকদের পাশে আছে সেদেশে রসরকার, উন্নতপ্রযুক্তি, গবেষণা, সুপরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের কৃষককে মুখোমুখি হতে হচ্ছে আরও বেশি চ্যালেঞ্জের। আমি মনে করি কৃষকই বাংলাদেশের প্রধানতম নায়ক। তাদের হাতেই রচনা হয়েছে ক্ষুধা মুক্ত বাংলাদেশ। আমরা প্রায়ই তা ভুলে যাই। কিন্তু এই কৃষকরা ই শ্রমে ঘামে আমাদের অন্ন জুগিয়ে যাচ্ছেন। কৃষক নিরন্তর চেষ্টায় এগিয়ে চলছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের এ সময়ে তরুণ কৃষকরা প্রযুক্তি নির্ভর কৃষিতে অসামান্য সাফল্যের নজির গড়ছেন। প্রত্যেকেই বিশেষ মূল্যায়নের দাবি রাখেন।
যারা অ্যাওয়ার্ড পেলেন স্ব স্ব ক্ষেত্রে তাদের অনেক বড় অবদান।স্ট্যান্ডার্ড চাটার্র্ড ব্যাংকের সাথে যুক্ত হয়ে এই নিবেদিত প্রাণ মানুষদের সম্মানিত করতে পেরে চ্যানেল আই আনন্দিত।’
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও চ্যানেলআইকে এইধরনের আয়োজনের জন্য সাধুবাদ জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী জনাব মো.আব্দুররহমান এমপি বলেন, ‘কৃষক এগিয়ে গেলেই এগিয়ে যাবে দেশ। জলবায়ুপরিবর্তনকে মাথায় রেখে প্রযুক্তির কৃষির প্রতি তরুণ কৃষকদের উৎসাহী করতে এমন আয়োজন সত্যিপ্রশংসনীয়। আমি বিশ্বাস করি, কৃষি ও কৃষির উপখাত সমৃদ্ধ হলেই দেশ সমৃদ্ধ হবে।’
পুরস্কার প্রাপ্তরা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী কাছ থেকে পুরস্কারের অর্থ,ক্রেস্ট ও সনদগ্রহণ করেন।