পরিবহন শ্রমিক ৮১৩ জনের অধিকাংশই টিকা বিহীন
ঝালকাঠি মোঃ রাজু খান, (ঝালকাঠি):
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি তৃতীয় ধাপে টিকা গ্রহণ ও মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতা মূলক করা হলেও তা উপেক্ষিত থাকছে গণপরিবহনে। গণপরিবহন শ্রমিকদের অধিকাংশই এখনও টিকা গ্রহণের আওতাভুক্ত হয়নি। যাত্রী সেবায় শ্রমকিরা মাস্ক ব্যবহার ছাড়াই উঠানামা ও ভাড়া আদায় করছেন।
সবমিলিয়ে একজন শ্রমিক দিনে শত শত যাত্রীর সংস্পর্শে যাচ্ছেন। পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেবার ব্যবস্থা করেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এছাড়া আন্তঃজেলা বাস ও মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নও কোনো উদ্যোগ নেয়নি। একজন শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হলে আরও হাজারো যাত্রীর মাঝে সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে। পরিবহন শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে বাস টার্মিনালে টিকাদান কর্মসূচির দাবি জানান তারা।
সংগঠন সূত্র জানায়, ঝালকাঠি আন্তঃজেলা বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নে তালিকাভুক্ত সদস্য রয়েছে ৮১৩জন। এতো পরিমাণ মানুষকে সচেতন করে একত্রে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করেনি কেউ। তবে নিজ ব্যবস্থাপনায় অনেক শ্রমিক করোনা টিকা নিয়েছেন।
এখনও অর্ধেকেরও বেশি শ্রমিক টিকা নেয়নি বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির শীর্ষ এক নেতা। বাস টার্মিনালে কথা হয় এনা পরিবহনের বাসচালক সোহেল রানার সঙ্গে। তিনি বলেন, টিকা কীভাবে নিতে হয় তা জানি না। শ্রমিক ইউনিয়ন বা পরিবহন মালিকদের পক্ষ থেকেও টিকা নেওয়ার কথা বলা হয়নি।
সম্প্রতি গণটিকা কর্মসূচির কথা শুনেছি। কিন্তু কাজ ফেলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নেওয়ার সময় হয়নি। এছাড়া টিকা নেওয়ার পর জ্বর আসে বলে শুনেছি। জ্বর এলে আবার কাজকর্মও বন্ধ থাকবে। তখন পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
সোহেল রানার সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তখন চারপাশ থেকে আরও ছয়জন বাসচালক এবং সহকারী পাশে এসে দাঁড়ান। তারা সোহেলের কথায় একমত প্রকাশ করেন। এই ছয়জনের মধ্যে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন মাত্র একজন। আরেকজন গণটিকার প্রথম ডোজ নিলেও দ্বিতীয় ডোজ নেননি।
তবে টিকাদান কর্মসূচি আরও সহজ করতে টার্মিনালের ভেতরে অস্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা। আরেক পরিবহনের চালক সাইদুল আলম করোনা টিকা নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গাড়ি চালাইয়া কুলাই না। টিকা নিমু কখন?’
তবে সুস্থতার জন্য অবশ্যই টিকা দেওয়া উচিত বলে স্বীকার করেন তিনি। ঝালকাঠি আন্তঃজেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান জানান, গত ১০জানুয়ারী আমাদের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ২৩জানুয়ারী আমাদের (নবনির্বাচিতদের) আনুষ্ঠানিক শপথ হয়েছে।
গত (২৪ জানুয়ারী) বিকেলে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দায়িত্বগ্রহণ করেছি। এ কারণে সাবেক কমিটি কি করছে তা বলতে পারছি না। তবে দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে খোঁজ নিয়ে জেনেছি অর্ধেকেরও বেশি সদস্য করোনার টিকা নেয়নি।
শ্রমিকরা সাধারণত স্বাস্থ্যসহ কোন বিষয়েই তেমন সচেতন না। তাই অধিকাংশ টিকা বঞ্চিত রয়েছে। যেহেতু টার্মিনালে টিকা ক্যাম্পের ব্যবস্থা করলে ওখানে সার্টিফিকেট পেতে সমস্যা হয়। তাই অতিদ্রুত রেজিস্ট্রেশন করে সবাইকে টিকা গ্রহণের আওতায় নেয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি বলেও জানান তিনি।