মুন্সিগঞ্জে করোনার প্রভাবে ভালো নেই তারা

কায়সার সামির (মুন্সিগঞ্জ):
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস জনিত দ্বিতীয় লকডাউনে বেকার হয়ে পড়েছে মুন্সিগঞ্জ জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে কামার শিল্প। উপার্জন না থাকায় পরিবার নিয়ে কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন পার করছে এই পরিবারগুলো। নিম্ন আয়ের মানুষ করোনার প্রথম প্রভাবের সংকট কাটিয়ে উঠতেই দ্বিতীয় লকডাউনে যেন মরার উপর খাড়ার ঘা হয়েছে এ পেশার মানুষের। দেখা দিচ্ছে নানান সমস্যা। দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে কর্মকারের লোহার তৈরি এসকল উপকরণের চাহিদা এবং বাজারমূল্য অনেকটাই কমে গেছে।
টঙ্গীবাড়ী উপজেলার ধীপুর ইউনিয়নের আলদি গ্রামে দীর্ঘদিন যাবৎ কামার সম্প্রদায়ের বসবাস। বহু বছর আগে এ গ্রামে জেলে, কুমার, ও মাঝি সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করতেন। কিন্তু বর্তমানে জীবন ও জীবিকার টানাপোড়েনে অনেকেই গ্রাম ছেড়ে জেলা শহরে পাড়ি জমিয়েছেন। ঝুঁকছেন অন্য পেশায়।
উপজেলার কামারশালা লোহা আর হাতুড়ির টুং টাং শব্দে এই গ্রামের মানুষদের ঘুম ভাঙত। তবে এখন আর সেই শব্দে নেই তেমন প্রাণচাঞ্চল্যতা। করোনার প্রভাবে তাদের তৈরিকৃত পণ্যের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না। ফলে পণ্য তৈরিতেও তেমন আগ্রহ নেই। তবু বেঁচে থাকার তাগিদে হাঁপড়ের সাথে সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
কর্মকার একাব্বর হোসেন জানান, লকডাউন পরিস্থিতিতেও কামারগণ কঠিন সময় পার করছেন। কারণ উপকরণ তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করতে তাদের ভিন্ন এলাকায় যেতে হয়। ফলে পরিবহন সমস্যার ফলে এসকল উপকরণ কিনতে তারা বাড়ির বাইরে যেতে পারেননি। নিজেদের সংরক্ষিত অল্পবিস্তর কাঁচামালের সাহায্যেই তাদের কাজ চালাতে হয়েছে। তাছাড়া বিক্রি কেন্দ্রিক সমস্যা তো আছে।
দিঘীরপার এলাকার বাসিন্দা ইব্রাহীম মোল্লা বলেন ,এখন ধান কাটার মৌসুম। এ সময়ে কাঁচি’র চাহিদা থাকে প্রচুর। অন্যান্য বছর প্রত্যেকটি কাঁচির বাজারমূল্য ছিল ৮০/৯০ টাকা। কিন্তু এবছর দাম কমিয়ে ৫০/৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তার উপর আবার আছারিসহ (কাঠের তৈরী হাতল বিশেষ)। কারণ আছারি ছাড়া কাঁচি কেউ কিনতে চায় না।
এভাবেই নিজেদের জীবনযাত্রা সচল রাখতে ক্রেতা ধরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন কামার শিল্পীরা।