বন্ধুর মতো মানুষের পাশে থাকবে র্যাব’

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) গুরুতর অপরাধ দমনে কাজ করছে, যার ফলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। র্যাব বলছে, এই সফলতা অর্জনে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিরবচ্ছিন্ন তত্ত্বাবধান, র্যাবের প্রতিটি সদস্যের কঠোর পরিশ্রম, সর্বোপরি দেশবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন ও ভালোবাসা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত এ বাহিনী ২০০৪ সালে স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে অংশ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। ২৬ মার্চ প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবছর দিনটিকে ‘রেইজিং ডে’ হিসেবে পালন করে আসছে বিশেষ এ বাহিনী। বর্তমানে বাহিনীর মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব পালন করছেন অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে র্যাবের জনবল ও ব্যাটালিয়নের সংখ্যা। বর্তমানে সারাদেশে এ এলিট ফোর্সের ব্যাটালিয়ন সংখ্যা ১৫টি। যেখানে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড, আনসার ও সরকারের বেসামরিক প্রশাসনের চৌকস কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে র্যাব
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে র্যাব। তাদের হাতেই ধরা পড়ে জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমানের ভাই আতাউর রহমান সানি, জামাতা আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন ও খালেদ সাইফুল্লাহ ওরফে ফারুক। বিচারের রায়ে ইতোমধ্যে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে এই জঙ্গিদের অনেকেরই।
২০১৬ সালে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়ে আবারও অস্তিত্ব জানান দেয় জঙ্গিরা। ওই ঘটনা পরবর্তী জঙ্গিদের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেফতারে সক্রিয় ছিল র্যাব। শীর্ষ কয়েকজনকে গ্রেফতারের মাধ্যমে সাফল্যও দেখায় র্যাব। এর ধারাবাহিকতায় র্যাব কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়, সাভারের আশুলিয়ায়, টাঙ্গাইল, গাজীপুরের হাড়িনালে বিভিন্ন জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালায়। এছাড়া মিরপুরের দারুসসালামের কমল প্রভা, নাখালপাড়ার রুবি ভিলায় জঙ্গি আস্তানায়ও অভিযান চালায় র্যাব। বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর কিছু নেতা ও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ আইটি বিশেষজ্ঞকে গ্রেফতারের মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনকে দুর্বল করে দেয় র্যাব।
কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযানিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গত এক বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমসহ বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর তিন শতাধিক সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে রোল মডেল। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে র্যাব তার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে জঙ্গিবাদ এখন নিষ্ক্রিয় প্রায়।

দস্যুমুক্ত সুন্দরবন
২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবন অঞ্চলকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আত্মসমর্পণকারী প্রত্যেকে আর্থিক অনুদান পেয়েছেন। ২০২১ সালে র্যাব সুন্দরবন দস্যুমুক্তকরণের তিন বছর পূর্তি উদযাপন করে। এই উপলক্ষে র্যাব পুনর্বাসন চাহিদা সমীক্ষা চালিয়ে আত্মসমর্পণকৃত দস্যুদের মাঝে ঘর, দোকান, নৌকা, জাল ও গবাদি পশু হস্তান্তর কার্যক্রম শুরু করে।
শুধু ২০২১ সালেই এই কার্যক্রমের আওতায় আত্মসমর্পণকারীদের মাঝে ১০২টি ঘর, মালামালসহ ৯০টি মুদি দোকান, জালসহ মাছ ধরার নৌকা ১২টি, ইঞ্জিনচালিত নৌকা আটটি ও ২২৮টি গবাদি পশু দেয় র্যাব।
২০২১ সালের মে মাসে ৫০০ অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে র্যাব/ফাইল ছবি
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে র্যাবের সাফল্য
র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে অবৈধ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধারে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত রাজধানী ঢাকা ও সীমান্তবর্তী জেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে ১৭ হাজার ৬৭১টি অস্ত্র ও দুই লাখ ৫১ হাজার ৭২৩ গোলাবারুদসহ ১৩ হাজার ৪৬৬ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব। পাশাপাশি বনে-জঙ্গলে অভিযানে রকেট লঞ্চার, গ্রেনেড, বিভিন্ন প্রকার শেল, ককটেলসহ বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে এ বাহিনী।
মাদকবিরোধী অভিযান
র্যাব মাদকবিরোধী অভিযানও চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৮ সালের ৩ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা র্যাবের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মাদকের বিরুদ্ধে গুরুত্বারোপ করে র্যাবকে এ বিষয়ে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ স্লোগানে মাদকবিরোধী অভিযান বেগবান করে র্যাব।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালেও মাদকবিরোধী উল্লেখযোগ্য অভিযান চালায় এই ফোর্স। বিগত বছরে সারাদেশে র্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে মোট ১৫ হাজার ৫৯৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় এক কোটি ৬৩ লাখ ৫ হাজার ৪৮৩ পিস ইয়াবা। এছাড়া সাড়ে ৩৫ কেজি গাঁজা, এক লাখ ৩৯ হাজার ১৯৪ বোতল ফেনসিডিল, ০.৫৮ কেজি কোকেন, সাড়ে ৫৮ কেজি আফিম ও ১৪৯ কেজি হেরোইন জব্দ করে র্যাব।
হত্যা, ধর্ষণ ও দীর্ঘদিনের পলাতক আসামি গ্রেফতার
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর র্যাব চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণসহ বিভিন্ন মামলার আসামিদেরও গ্রেফতারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। গত এক বছরে হত্য ও ধর্ষণ সম্পর্কিত ঘটনায় ৪৮৫টি অভিযান চালিয়ে র্যাব পাকড়াও করে ৬৮৯ জনকে।
এর মধ্যে গত ১২ জানুয়ারি র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় বগুড়ার চাঞ্চল্যকর বিদ্যুৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি হেলাল হোসেনকে (৪৫)। জনপ্রিয় ‘ভাঙা তরি ছেঁড়া পাল’ শিরোনামের গানের বাউল মডেল হিসেবে নিজের আসল পরিচয় লুকিয়ে অভিনয় করছিলেন তিনি।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। ওই ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত ছয়জনকেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে র্যাব।
এক সময় যে সুন্দরবনে দস্যু আতঙ্ক তাড়িয়ে বেড়াতো, সেখানে এখন শান্তির বাতাস বইছে। এক বাসিন্দার সঙ্গে র্যাব ডিজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের মতবিনিময়/ফাইল ছবি
২০২১ সালের ১৬ মে রাজধানীর পল্লবীতে নিজ সন্তানের সামনে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় শাহীন উদ্দীন নামে একজনকে। র্যাব খুব অল্প সময়েই এই হত্যাকাণ্ডের মূল নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এম এ আউয়ালকে গ্রেফতার করে জনমনে স্বস্তি নিয়ে আসে। সাংবাদিক ছদ্মবেশে ১৭ বছর পালিয়ে থাকা হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আশরাফ হোসেন ওরফে কামালকেও (৪৭) গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার সাভার থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
মানবপাচার রোধে র্যাবের ভূমিকা
সাম্প্রতিককালে প্রতারণামূলক ফাঁদে ফেলে উচ্চ বেতনে লোভনীয় চাকরির প্রলোভনে নারী পাচারে জড়িত রয়েছে কয়েকটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। এসব ঘৃণিত মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধীদেরও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে র্যাব। এই বাহিনী পার্শ্ববর্তী দেশে নারীপাচার ও বাংলাদেশি একজন তরুণীকে পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনায় আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের অন্যতম মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করে।
গত এক বছরে এমন ১১৪টি অভিযানে ৪৯৪ জন মানবপাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ৯৭টি মামলা করা হয়েছে। এসব অভিযানে ১৪৭ জন ভিকটিমকেও উদ্ধার করা হয়েছে।
কিশোর গ্যাং নির্মূল
কিশোর গ্যাং নির্মূলে র্যাব সদা তৎপর আছে। ২০১৭ সালে উত্তরায় স্কুল ছাত্র আদনান হত্যাকাণ্ডের পর আলোচনায় আসে ‘কিশোর গ্যাং’ নামে অপসংস্কৃতি। চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাসহ বেশ কয়েকজন কিশোর গ্যাং সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়। তারা প্রত্যেকে ‘ভাইব্বা ল কিং’ নামক একটি সংঘবদ্ধ ‘কিশোর গ্যাং’র সদস্য।
এভাবে শুধু ২০২১ সালেই সারাদেশে ৩৩টি অভিযানে ২৭টি কিশোর গ্যাংয়ের ৪৫৪ সদস্যকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে র্যাব। আভিযানিক কার্যক্রমে ‘কিশোর গ্যাং’ নির্মূলে তৎপরতা চালালেও র্যাব এই সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিরও উদ্যোগ নেয়। সেজন্য ২০২১ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে ‘সবার হোক একটাই পণ, কিশোর অপরাধ করবো দমন’ শীর্ষক টিভিসি উদ্বোধন করা হয়, যা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
করোনাকালে মাস্ক বিতরণ ও এ বিষয়ক সচেতনতা তৈরির জন্য প্রচারণা চালায় র্যাব/ফাইল ছবি
অনিবন্ধিত সিম ও অবৈধ ভিওআইপি বিরোধী অভিযান
অনিবন্ধিত সিম ব্যবহার করে অপরাধীরা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপে যুক্ত হয়। র্যাব এ ধরনের অপরাধীদের ধরতেও সক্রিয়। ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর র্যাব বিটিআরসির সহযোগিতায় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত চক্রের চারজনকে আন্তর্জাতিক কলিং কার্ডসহ গ্রেফতার করে। গত এক বছরে র্যাব এমন ৩৮টি অভিযানে মোট ৭৫ জনকে গ্রেফতার করে।
বিটকয়েনের বিরুদ্ধে র্যাবের ভূমিকা
সম্প্রতি আলোচনা রয়েছে ‘বিটকয়েন’। এই অনলাইন মুদ্রার মাধ্যমে ভার্চুয়াল জগতে নানান ধরনের অবৈধ লেনদেন করে অপরাধীরা। সেজন্য বিটকয়েনের বিরুদ্ধেও কার্যক্রম চালাচ্ছে র্যাব।
২০২১ সালের ৩ মে রাতে রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকায় বিটকয়েন ব্যবসা ও প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মূলহোতা ইসমাইল হোসেন সুমন ওরফে কয়েন সুমন ও তার ১১ সহযোগীকে গ্রেফতার করে র্যাব। তারা বেসিক বিজ মার্কেটিং নামে একটি আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের আড়ালে অবৈধ বিটকয়েন লেনদেন ও অনলাইনে বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ওই বছরের ২০ জুন রাজধানীর দারুসসালাম থানাধীন মাজার রোডে অভিযান চালিয়ে দুটি ল্যাপটপ, দুটি ডেবিট কার্ডসহ বিটকয়েন লেনদেনে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা
নিরাপদ খাদ্য ও চিকিৎসা নিশ্চিতে দেশজুড়ে খাবার হোটেল, রেস্টুরেন্ট, উৎপাদন কারখানা এবং ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও অভিযান চালিয়ে আসছে র্যাব। সক্রিয় আছে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল ওষুধ, শিশু খাদ্য, ভুয়া চিকিৎসক এবং পাসপোর্ট অফিসের দালাল চক্রের বিরুদ্ধেও। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে গত বছর র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এর মাধ্যমে দুই হাজার ৪১৫টি অভিযানে ১২ হাজার ৭৪২টি মামলা দায়ের করা হয় এবং ৪৪ কোটি ১৯ লাখ ২১ হাজার ৩১৯ টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়। এছাড়া ৯৮১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
র্যাবের মানবিক উদ্যোগ
অপরাধ দমনের পাশাপাশি র্যাব নানা মানবিক কার্যক্রমও চালিয়ে আসছে। দুস্থ ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে র্যাব কুড়াচ্ছে প্রশংসাও।
২০২১ সালের ৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে অনেক শ্রমিকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। র্যাব তার মানবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ওই দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ শতাধিক পরিবারের মাঝে মানবিক সহায়তা দেয়। এছাড়া ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে গুরুতর আহত-অগ্নিদগ্ধদের বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটের সুচিকিৎসার জন্য র্যাবের নিজস্ব হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় আনা হয়। করোনাকালে মাস্ক বিতরণসহ স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালায় এ বাহিনী। প্রতি বছরের মতো এ বছরেও শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে র্যাব।
ঢাকার মোহাম্মদপুর, কেরানীগঞ্জ ও সাভার এলাকায় চাঁদাবাজি-ডাকাতিতে বেপরোয়া হয়ে উঠছিল গলাকাটা মোশাররফ ওরফে গাংচিল মোশাররফ বাহিনী, সম্প্রতি এ চক্রের মূল হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে র্যাব/ফাইল ছবি
মুখপাত্র যা বলছেন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে র্যাবের অগ্রযাত্রার বিষয়ে জানতে চাইলে বাহিনীর লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বন্ধুর মতো সাধারণ মানুষের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য এ দেশকে জঙ্গিমুক্ত করা। সেই সঙ্গে দেশ থেকে মাদক, অস্ত্র কারবারি ও সন্ত্রাস নির্মূল করা। আমাদের বেশ কিছু ঈর্ষণীয় সাফল্য রয়েছে। যার মধ্যে একটি দস্যুমুক্ত সুন্দরবন।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা নিয়ে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে চলছে অকুতোভয় র্যাব ফোর্সেস। রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা ও স্বার্থ নিশ্চিত করতে বিগত দেড় যুগের মতো ভবিষ্যতেও দেশ ও দেশের জনগণের মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিটি পদক্ষেপ সততা ও সাহসের সঙ্গে গ্রহণে র্যাব বদ্ধপরিকর।
র্যাবের এ দীর্ঘ পথচলায় পাশে থাকার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল জানিয়ে কমান্ডার মঈন বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা আমাদের চলার পথকে অনেক সহজ করেছেন। র্যাবের সুনাম এবং সাফল্যের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে সাংবাদিকদের পাশে থাকার গল্প।