আসামির মৃত্যু: ‘পুলিশ নির্যাতনের সম্পর্কে নেই’

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় ‘গুজব ছড়িয়ে’ হামলা চালানোর মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের হেফাজতে থাকা এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পুলিশের চার সদস্যের তদন্ত প্রতিবেদন বলছে ‘এই মৃত্যুর সঙ্গে পুলিশের কোন ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের সম্পর্ক নেই’।
তবে জেলা ডিবি পুলিশের রিমান্ডে থাকা আসামি আবুল হোসেনের মৃত্যুকে হত্যার অভিযোগ তুলেছে পরিবার।
সালথার সহিংসতার ৩ নং মামলায় ডিবি পুলিশের রিমান্ডে থাকা অবস্থায় শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আবুল হোসেন মোল্লা (৪৮) নামে এক আসামি মারা যান। তার বাড়ি সালথার সোনাপুর ইউনিয়নের গোপালিয়া গ্রামে। তিনি গ্রেপ্তার হন, গত ১৬ এপ্রিল এবং ২৮ এপ্রিল পাঁচ দিনের পুলিশের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
গত ৫ এপ্রিল জেলার সালথা উপজেলায় স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন রামকান্তপুর এলাকায় লকডাউন বাস্তবায়ন করতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে গুজব ছড়িয়ে সালথা থানা, উপজেলা পরিষদ ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়। গুজব ছড়িয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয় বলে প্রশাসন ও স্থানীয়দের ভাষ্য।
রবিবার বিকালে জেলা পুলিশের পক্ষে পুলিশ হেফাজতে আসামির মৃত্যুর ঘটনায় প্রেসব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, শনিবারই আমরা এ ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশাকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করি। ২৪ ঘন্টার মধ্যে তারা আসামি আবুল হোসেনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে করে প্রতিবেদন দিয়েছে।
সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আসামি আবুল হোসেনের মৃত্যুর সাথে পুলিশের কোন ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের সম্পর্ক নেই’।
ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের এএসআই রমজান খন্দকার বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছে।
জেলা পুলিশ সুপার আরো বলেন, এ ঘটনায় মোট আটটি মামলা করা হয়। এই সব মামলায় ৩৭০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো কয়েক হাজার জনের বিরুদ্ধে মামরা করা হয় । এ পযন্ত ওই মামলায় নামীয় ৩১ সহ মোট ১০৭ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিকে নিহত আবুল হোসেনের মেয়ে তানিয়া আক্তার বলেন, আমার বাবা সহিংসতার সাথে যুক্ত ছিল না, তিনি নির্দোষ ছিল। গ্রামে কোনো রাজনীতি করত না। তাকে অন্যায়ভাবে আসামি করা হয়েছিল। এখন তাকে রিমান্ডে নিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। আমার পরিবার বিষয়টির ন্যায় বিচার দাবি করছি।