‘ছেলে যুদ্ধে গেছে, ওর জন্য দোয়া করবেন’
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইউক্রেনের নাগরিক হাবিবুর রহমান হাবিবের। তার বড় ছেলে তায়িব মাতৃভূমি রক্ষায় রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে লড়তে গেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় আলোচিত সংবাদ পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন হাবিবুর রহমান হাবিব।
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার হামলার পর মাতৃভূমি রক্ষায় আমার ছেলে স্বেচ্ছায় যুদ্ধ অংশ নিয়েছে। তাকে মানা করেছিলাম, সে আমাদের কথা শোনেনি। সে বলেছে, বাবা আমরা এ দেশে জন্ম নিয়েছি।
শত্রুরা এ দেশে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। নাগরিক হিসেবে আমার কর্তব্য শত্রুদের মোকাবিলা করা। সে বলেছে, আমি কোনো ভয় পাই না। আমি যাচ্ছি, হয়তো বীরের বেশে ফিরে আসবো, নয়তো মৃত্যুবরণ করবো।’
হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘এখন তায়িব কিয়েভ শহর থেকে প্রায় দেড়শ মাইল দূরে অবস্থান করছে। সেখানে রাশিয়ানরা ভারী অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করেছে। সেই শহরটা উদ্ধারে ইউক্রেনের বাহিনী যুদ্ধ করছে, সেখানে আমার ছেলে যোগ দিয়েছে। জানতে পারছি, সেখানে প্রচুর গোলাগুলি হচ্ছে। আপনারা আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।’
রাশিয়ার আক্রমণের পর ইউক্রেনে বাংকারের ভেতরে খুব ভয়াবহ অবস্থায় ছিলেন জানিয়ে হাবিব বলেন, ‘প্রচুর বোমাবর্ষণ করা হয়েছে। ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চারদিকে বারুদের গন্ধ। বোমায় আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে। রাতে বাংকারে আশ্রয় নিতাম। সকাল ১০টার পর ঘরে এসে খাবার খেতাম। সাইরেনের শব্দে আবার বাংকারে যেতাম। এভাবে পাঁচ দিন কাটিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কারফিউয়ের জন্য তিনদিন বাইরে বের হতে পারিনি। তবে এখন কারফিউ তুলে নিয়েছে। মানুষ সুপারশপে খাবার কিনতে যাচ্ছে। গতকাল সেটা উঠিয়ে নিয়েছে। মানুষ দোকানে যাচ্ছে খাবার কিনতে। কিন্তু কোথাও কিছু নেই। খাদ্য ও পানির সংকট প্রকট।’
তার ভাষ্য, রাশিয়ানরা যেভাবে আক্রমণ করছে, মনে হচ্ছে পুরো দেশটা ধ্বংস করে দেবে। খারকিভ, চেরনোবিল ধ্বংস করে দিয়েছে রুশ বাহিনী।
হাবিবুর রহমান আরও বলেন, ‘ছেলে গতকাল কল দিয়ে কিছু জামা-কাপড় চেয়েছিল। আমরা সেগুলো এক আর্মি ক্যাম্পে দিয়েছি, ও সেগুলো পেয়েছে। সে বলেছে, ওখানে খুব ভয়াবহ অবস্থা। বোম্বিং হচ্ছে সব সময়। ওরা রাশিয়ানদের কিছু ট্যাংক ধ্বংস করেছে।’
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইউক্রেনের এ বাসিন্দা বলেন, ‘রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকেই বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ইউক্রেনের নাগরিকরা নিজ জন্মভূমিতে থাকলেও অন্য দেশের নাগরিকরা (যাদের পাসপোর্ট নেই) শরণার্থী হিসেবে পোল্যান্ডে চলে যাচ্ছে।’