ময়মনসিংহে রিকশাচালকের কাছ থেকে চাঁদা নেয়া তিন পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

রাসেল আহমেদ (ময়মনসিংহ):
ময়মনসিংহের ভালুকায় রোজাদার রিকশা চালকের কাছ থেকে ৭০০ টাকা চাদাবাজিইর অভিযোগে হাইওয়ে পুলিশের এক এটিএসআইসহ ৩ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান। তিনি বলেন, শনিবার (৮ মে) দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে তাদের বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে, বরখাস্তকৃত পুলিশ সদস্যদের পরিচয় প্রকাশে নিষেধ থাকায় তাদের পরিচয় প্রকাশ করেননি তিনি।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৪ মে) মধ্যরাতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকা বাসস্ট্যান্ড ফুটওভার ব্রিজের পাশে ইউটার্নে অটোরিকশাচালক শামীমের কাছ থেকে ৭০০ টাকা চাঁদা নেয় ভালুকা হাইওয়ে পুলিশ। পরদিন বুধবার (৫ মে) মধ্যরাতে শামীম ভালুকার সিডস্টোর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অটোরিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ তার ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। শামীম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে না চিনে জিজ্ঞাসা করেন কোথাও যাবেন কি-না। এ সময় চেয়ারম্যান আবুল যাবে না বলে জানান। তার চেহারা মলিন দেখে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন চেয়ারম্যান।
শামীম টাকা নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানান। চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে রাত আড়াইটার দিকে শামীমের ছবি দিয়ে ক্যাপশনে পুরো ঘটনাটি তুলে ধরেন। এরপরই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
ভালুকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ফেসবুক পোস্টটি বিডিফিন্যান্সিয়াল নিউজ ২৪.কমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো- ‘আজ রাত ১.২০ মিনিটের সময় লোকটি সিডস্টোর বাসস্ট্যান্ডে একটি অটোরিকশা নিয়ে দাঁড়ানো। আমি একাই দাঁড়িয়ে আছি, আমার গাড়ি ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে আসতে একটু দেরি করে। লোকটি এসে মাকে জিজ্ঞেস করলো কোথায় যাবেন আমি বললাম, না এখানেই।আমি যে ভালুকা যাবো বলি নাই।
আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম এত রাত্রে যাত্রী কি পাওয়া যায়?লোকটি বলল রোজা থেকে সারাদিন পারি না রাতেই যা পাই তা দিয়ে সংসার চালাই আর গাড়ির কিস্তি দেই। তবে স্যার কী করব গত রাত্রে ৬০০ টাকা ইনকাম হয়েছিল থানার কয়েকজন পুলিশকে থানার সামনে নামিয়ে যখন ইউটার্ন নেই তখন হাইওয়ে পুলিশ প্রথমে আমার গাড়িটি নিয়ে যাবে।
এক পর্যায়ে বলে এক হাজার টাকা লাগবে। আমি অনেক অনুরোধ করে বলি স্যার আমি সারাদিন রোজা থেকে কাজ করতে পারি নাই ইফতারের পর থেকে ৬০০ টাকা পেয়েছি চাল-ডাল কিনব। কিন্তু কোন কথাই শুনলো না শেষ পর্যন্ত আমার কাছে আগের ১০০ টাকা ছিল মোট ৭০০ টাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে খালি হাতে বাসায় যাই। না খেয়ে রোজা থেকে আজ আবার পেটের দায়ে এত রাত পর্যন্ত আছি। আমার প্রশ্ন আমরা কোথায় বসবাস করি?’