চাঞ্চল্যকর দুই শিশুর ঘাতক সিরাজুলের মৃত্যুদন্ড
গোলাম মোস্তফা মুন্না, (যশোর):
মণিরামপুরে চাঞ্চল্যকর শিশু শারমিন ও কবির হত্যা মামলায় ঘাতক সিরাজুল ইসলামের মৃত্যুদ- ও জরিমানার আদেশ দিয়েছে একটি আদালত। হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিন নারীকে খালাস দেয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) অতিরিক্তি দায়রা জজ ১ম আদালতে বিচারক মোস্তফা কামাল এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। দ-িত সিরাজুল ইসলাম উপজেলার বাটবিলা গ্রামের মোমিন সরদারের ছেলে।
সরকার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেছেন অতিরিক্ত পিপি, অ্যাডভোজেট আবু সেলিম রানা ও অ্যাডভোকেট বিমল কুমার রায়।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, মণিরামপুরের বাটবিলা মৌজার ৩৯৫ নম্বর দাগের ছয় বিঘা জমি নিয়ে স্থানীয় জমির সরদারের সাথে আসামি সিরাজুল ইসরামের বিরোধ রয়েছে। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি সিরাজুলসহ অন্যরা বিরোধ পূর্ণ ওই জমিতে বেড়া দিচ্ছিল।
এসংবাদ পেয়ে জমির সরদারের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে যেয়ে বাধা দিলে তারা চলে যায়। ঘটনাস্থলে জমির সরদার ও তার স্ত্রী এবং বড় ভাবি দাড়িয়ে থাকা অবস্থায় আসামি সিরাজুল ইসলাম একটি ধারালো গাছি দা নিয়ে তাদের দিকে তেড়ে আসে।
তারা তিনজন দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এসময় সিরাজুল রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা তার শিশুকন্যা শারমিনকে কুপিয়ে হত্যা করে এবং ধাওয়া করে ভাইপো শিশু কবির হোসেনকে পাশের পুকুর পাড়ে ধরে কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে চলে যায়।
এসময় স্থানীয়রা ধাওয়া করে সিরাজুলকে ধরতে ব্যর্থ হয়ে তার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এদিন নিহত শারমিনের পিতা ও নিহত কবিরের চাচা জমির সরদার বাদী হয়ে সিরাজুল ইসলামসহ ৬ জনকে আসামি করে মণিরামপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এ মামলার তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সিরাজুল ইসলামসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ৮ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জামিরুল ইসলাম। হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় আমিন সরদার ও মোমিন সরদারের অব্যাহতির আবেদন জানানো হয় চার্জশিটে।
দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুই শিশুকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে মৃত্যুদ- ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক আসামি সিরাজুলের স্ত্রী শিরিনা বেগম, আমিন সরদারের স্ত্রী করিমন নেছা ও মোমিন সরদারের স্ত্রী আরফা খাতুন ওরফে আরিফাকে বেকসুর খালাস দেন। মৃতুদ-প্রাপ্ত সিরাজুল ইসলাম পলাতক রয়েছে।