সন্তান প্রসবের এক ঘন্টার মধ্যেই প্রেমিকের সাথে নিখোঁজ গৃহবধূ

গোলাম মোস্তফা মুন্না, (যশোর) :

হাসপাতালে নবজাতককে ফেলে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে গেছে গৃহবধূ। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) রাতে ফাস হয়ে পড়ে। তবে, পুলিশের উপস্থিতিতে বুধবার (৬ অক্টোবর) ওই নবজাতককে তার পিতা ও নানির কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় স্ত্রী ও প্রেমিকের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার কোতয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন শহরের স্টেডিয়াম পাড়ার বাসিন্দা ও নবজাতকের পিতা শাহিনুর হোসেন।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর রাত ১২টা ৫১ মিনিটে নিঝুম (২০) নামে ওই নারী যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। ভর্তির সময় পরিচয় দেয়া হয় তিনি যশোর শহরের স্টেডিয়াম পাড়ার শাহিনুর হোসেনের স্ত্রী। এসময় সাথে থাকা যুবক নিজেকে শাহিনুর হিসেবে পরিচয় দেন। পরের দিন মঙ্গলবার বেলা একটার সময় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার একটি ছেলে শিশু জন্ম হয়। এর এক ঘণ্টা পরেই ওয়ার্ড থেকে নিখোঁজ হয় নিঝুম। তার কোন স্বজন না থাকায় নবজাতকে নিয়ে বিপাকে পড়েন সেবিকারা। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

হাসপাতালে ভর্তি খাতায় ভর্তি তথ্যে নিঝুমের পরিচয় যশোরের স্টেডিয়াম পাড়ায় উল্লেখ করলেও খোঁজ করে পাওয়া যাচ্ছিলো না। মোবাইর নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে বলে ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সেবিকারা জানান। নবজাতকের স্বজনদের কারো না পেয়ে ওই শিশুকে দুই দিন সেবিকারা দেখভাল করেন। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশের নবজাতকের নানা-নানি ও পিতার সন্ধান বের করে।

নবজাতকের পিতা শাহিনুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি। নবজাতকের নানা শাহ আলম জানান, ২০২০ সালের ৩ মার্চ নিঝুম ও শাহিনুরের সাথে বিয়ে হয়। পরে নিঝুম স্বামী শাহিনের সাথে ঢাকায় থাকতো। কিছুদিন আগে নিঝুম সন্তান প্রসব করতে (মাগুরায়) তার বাবার বাড়ি আসে। কিন্তু এর আগে নিঝুমের সাথে পরিচয় হয় ভোলা জেলা সদরের খয়েরতলা এলাকার ইব্রাহিম নামে এক যুবকের। এই ইব্রাহিম ফুসলিয়ে নিঝুমকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। নিঝুম এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে তা পরিবারের কেউ জানতো না। সেখানে সন্তান প্রসবের পরই ইব্রাাহিম ও নিঝুম অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে বলে ধারণা করছেন শাহ আলম। অন্য স্বজনদের ভাষ্যমতে নিঝুমকে হাসপাতালে ভর্তির সময় স্বামী শাহিনুর ছিলেন না। পরকীয়া প্রেমিক স্বামী পরিচয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। পরিবারের কোন সদস্য তার হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে জানতেন না। আর শাহিনুর জানতেন তার স্ত্রী মাগুরায় পিতার বাড়িতে রয়েছে।

যশোর কোতয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম ইসলাম জানান, নিঝুমের স্বামী শাহিনুরের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। নবজাতক শিশটি এখন তার বাবার কাছে। নিঝুম ও প্রেমিক ইব্রাহিম সন্ধানে মাঠে নেমে পুলিশ।