South east bank ad

নিষেধ থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে চলছে স্পিডবোট

 প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   সারাদেশ

নিষেধ থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে চলছে স্পিডবোট

এস এম আরাফাত হাসান (মাদারীপুর):

বাংলাবাজার -শিমুলিয়া রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম নৌপথ। চলমান ‘লকডাউনে’ গণপরিবহনের সঙ্গে সঙ্গে এই নৌরুটের লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ রয়েছে গত ৫ এপ্রিল থেকে।

এদিকে দ্বিতীয় দফা কঠোর ‘লকডাউনে’র তৃতীয় দিন থেকে হঠাৎ করেই ঢাকাগামী যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে এই নৌরুটে। এর মধ্যে গত রোববার থেকে মার্কেট, শপিং মল খোলার ঘোষণায় শ্রমজীবী মানুষের ঢাকায় ফেরার তাড়া বেড়েছে।

গত শুক্রবার থেকে নৌরুটে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড়। লঞ্চ বন্ধ থাকায় যাত্রীদের বড় একটা অংশ পার হচ্ছে ফেরিতে করে।

এদিকে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকার নির্দেশনা থাকলেও মঙ্গলবার সকাল থেকেই স্পিডবোট ঘাটের পাশের একটি ঘাট থেকে যাত্রী পারাপার করতে দেখা গেছে বেশ কিছু সংখ্যক স্পিডবোট চালকদের। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের পার করা হচ্ছে।

ফেরিতে উঠতে ব্যর্থ এবং দ্রুত যাওয়ার তাড়া থেকে অসংখ্য যাত্রীরা স্পিডবোটে বাড়তি ভাড়া দিয়েই পার হচ্ছেন।
সরেজমিনে বাংলাবাজার ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ‘মঙ্গলবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে। ফেরিতে রয়েছে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। পদ্মা পার হতে যাত্রীদের মধ্যে এক ধরনের তাড়া রয়েছে। ফেরিতে নিজের জায়গা করে নিতে তাড়াহুড়া দেখা গেছে যাত্রীদের মধ্যে। আবার ফেরিতে উঠতে ব্যর্থ হয়ে অনেক যাত্রীই পার হচ্ছে স্পিডবোটে। ফেরিঘাট ছেড়ে যাওয়ার পর কিছু কিছু স্পিডবোট ফেরির সঙ্গে ভিড়িয়ে যাত্রীদের তুলে নিচ্ছে। সেক্ষেত্রে আড়াইশ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছে তারা।

এছাড়াও স্পিডবোট ঘাটের পাশে লঞ্চ ও ফেরিঘাটের মাঝামাঝি স্থান থেকে কিছু স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করছে। সেক্ষেত্রে তিনশ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে স্পিডবোট ভাড়া। স্বাভাবিক সময়ে এই ভাড়ার পরিমাণ ছিল দেড়শ টাকা।
যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, তাড়াতাড়ি ঢাকা যেতে হবে। এজন্য বেশি টাকা দিয়ে স্পিডবোটে পার হচ্ছি।
ভাঙ্গা থেকে আসা যাত্রী আবু বকর শিকদার বলেন, ফেরিতে যাত্রীদের চাপ অনেক। প্রচুর ভিড়। দাঁড়িয়ে থাকতে হবে রোদের মধ্যে পুরো পথ। তাই ফেরি বাদ দিয়ে স্পিডবোটে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে দ্রুত পৌঁছানো যাবে আবার রোদে পুড়তে হবে না।

মো. রাকিব নামের এক যাত্রী জানান, ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার সুযোগ নাই। গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সেক্ষেত্রে স্পিডবোটে কিছুটা স্বস্তি আছে। তবে নিষেধ থাকায় কিছু কিছু স্পিডবোট বাড়তি ভাড়া নিয়ে ঘাটের বাইরে গিয়ে যাত্রী পার করছে।

বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, লঞ্চের পাশাপাশি স্পিডবোট চলাচলও নিষেধ রয়েছে। তবে বাংলাবাজার ঘাটের এবং শিমুলিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে আসা কিছু স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করছে। যদিও স্পিডবোট ঘাট থেকে না নিয়ে পাশেই নদীর পার থেকে যাত্রী উঠাচ্ছে। কিছু বোট আবার ফেরির সঙ্গে ঠেকিয়ে যাত্রী উঠাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘাটের এক ব্যক্তি জানান, স্থানীয়ভাবে যারা প্রভাবশালী তাদের বোটগুলোই যাত্রীদের পারাপার করছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করে থাকে। ভাড়াও আদায় করে দ্বিগুণের বেশি।
বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার ঘাট সূত্র জানিয়েছে, নৌরুটে ৮৬টি লঞ্চ ও ২ শতাধিক স্পিডবোট রয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতে গত তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ আছে এসব নৌযান। তবে কিছু অসাধু স্পিডবোট চালক যাত্রী পারাপার করছে।
এ বিষয়ে নৌপুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কাঁঠালবাড়ী নৌপুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘাটে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। এরই মধ্যে কিছু কিছু স্পিডবোট ঘাটের বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রী পারাপার করছে। আমরা সেখানে গেলেই আবার দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করে তারা। তবে আমরা চেষ্টা করছি যাতে অবৈধভাবে স্পিডবোট যাত্রী পার না করতে পারে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ই্উএনও) মো. আসাদুজ্জামান জানান, নিষেধ থাকার পরও কিছু কিছু স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করছে বলে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে নৌপুলিশকে জানানো হয়েছে। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।

BBS cable ad

সারাদেশ এর আরও খবর: