এক বছরে অপারেটর বদল চার লাখ গ্রাহকের
নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তন এমএনপি (মোবাইল নাম্বার পোর্টেবিলিটি) সেবা গ্রহণে গত এক বছরে সফল হয়েছে প্রায় চার লাখ তিন হাজার ৩০৮ গ্রাহক। আর ব্যর্থ হয়েছে প্রায় এক লাখ ৭১ হাজার ৫৯৩ জন গ্রাহক। তবে অন্য অপারেটর ছেড়ে সবচেয়ে বেশি প্রায় তিন লাখ ২২ হাজার গ্রাহক গেছে রবি আজিয়াটায়। অর্থাৎ প্রায় ৮০ শতাংশ গ্রাহক গেছে অপারেটরটিতে।
এদিকে অন্য অপারেটর থেকে রবিতে আসতে বাধার সম্মুখীন হয়েছে প্রায় এক লাখ ২২ হাজার গ্রাহক, যেটি গ্রাহকসংখ্যায় প্রায় ৭১ শতাংশ।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্যমতে, গত এক বছরে (২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত) গ্রামীণফোন থেকে বের হয়ে অন্য অপারেটরে চলে গেছে প্রায় এক লাখ ৩৭ হাজার ১৭৯ গ্রাহক। আর রবি আজিয়াটা থেকে অন্য অপারেটরে গেছে ৪৯ হাজার ২২৭ গ্রাহক। অন্যদিকে বাংলালিংক থেকে বের হয়ে অন্য অপারেটরে গেছে দুই লাখ ১৩ হাজার ২৪৬ গ্রাহক। অর্থাৎ এমএনপিতে গ্রাহক ছেড়ে যাওয়ার শীর্ষে রয়েছে বাংলালিংক। এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান টেলিটক থেকে বের হয়ে অন্য অপারেটরে গেছে তিন হাজার ৬৫৬ গ্রাহক।
জানা যায়, গত এক বছরে গ্রামীণফোন থেকে অন্য অপারেটরে যেতে বাধার সম্মুখীন হয়েছে প্রায় ৫২ হাজার ৯৪৯ হাজার গ্রাহক। রবি থেকে অন্য অপারেটরে যেতে বাধার সম্মুখীন হয়েছে ২৯ হাজার ৩৭৬ গ্রাহক। আর বাংলালিংক থেকে অন্য অপারেটরে যেতে বাধার সম্মুখীন হয়েছে প্রায় ৮৫ হাজার ৯২৯ গ্রাহক। অর্থাৎ অপারেটর বদল করতে সবচেয়ে বেশি বাধার সম্মুখীন হয়েছে বাংলালিংক গ্রাহক। অন্যদিকে টেলিটক থেকে অন্য অপারেটরে যেতে বাধার সম্মুখীন হয়েছে প্রায় তিন হাজার ৩৩৯ গ্রাহক।
জানতে চাইলে বাংলালিংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এমএনপি সেবায় গ্রাহকদের বাধা দেওয়ার কোনো কারণ নেই। এক্ষেত্রে বিটিআরসি’র নীতিমালা অনুসরণ করেই সবকিছু পরিচালনা করা হয়। অনেক সময় করপোরেট গ্রাহকদের ক্ষেত্রে কোনো বকেয়া থাকলে সেক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হতে হয়। এমএনপির মাধ্যমে টেলিকমিউনিকেশনস সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা গ্রাহকের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। একটি কমপ্লায়েন্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলালিংক বিটিআরসি নির্ধারিত এমএনপির গাইডলাইন মেনে চলে সেবা দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
বিটিআরসির তথ্যমতে, গত জুলাই শেষে দেশে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রাহক রয়েছে প্রায় ১৬ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় সাত কোটি ৬০ লাখ ৮৪ হাজার। রবি আজিয়াটার প্রায় চার কোটি ৯১ লাখ। বাংলালিংকের গ্রাহক রয়েছে প্রায় তিন কোটি ৪৪ লাখ ১৭ হাজার। আর রাষ্ট্রীয় মোবাইল ফোন কোম্পানি টেলিটকের রয়েছে ৪৬ লাখ ৮১ হাজার গ্রাহক। অন্যদিকে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৯ কোটি ৭৮ লাখ ৪০ হাজার।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের অক্টোম্বরে শুরু হয় মোবাইল নাম্বার পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) সেবা। এর পর থেকে অপারেটর বদলে রবিতে যাওয়া গ্রাহকের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।