বিসিবির ত্রিমুখী পরিকল্পনা
করোনা ভাইরাসের ধাক্কা সামলে সচল হতে চলেছে ক্রিকেট বিশ্ব। ইতিমধ্যে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ মাঠে গড়াতে যাচ্ছে আগামী মাসে। করোনা পরবর্তী সময়ে ক্রিকেট কীভাবে মাঠে গড়াবে, তার স্পষ্ট নির্দেশনা বোর্ডগুলোকে পাঠিয়েছে আইসিসি। অবশ্য বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি সন্তোষজনক নয় বলে বিসিবি এখনই ক্রিকেট শুরুর চিন্তা করছে না।
তবে করোনার পর ক্রিকেট মাঠে ফেরানোর প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে বিসিবি। যেমনটা ইতিমধ্যে ক্রিকেটীয় কার্যক্রম পুনরায় শুরুর রোডম্যাপ তৈরি করে ফেলেছে দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা। এজন্য তৈরি করা হয়েছে তিনটি পৃথক পরিকল্পনা। পরিস্থিতি অনুযায়ী যে কোনো পরিকল্পনা ব্যবহার করা হবে।
আইসিসির গাইডলাইন অনুসরণ করে তিনটি আলাদা পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলেছে বিসিবির মেডিক্যাল বিভাগ। গতকাল বিসিবির প্রধান চিকিত্সক দেবাশীষ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সলো (একাকী) ট্রেনিং, গ্রুপ ট্রেনিং ও বোলারদেরকে নিয়ে আরেকটি ট্রেনিংয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। গতকাল জানতে চাইলে ট্রেনিং মডিউল তৈরি সম্পর্কে দেবাশীষ চৌধুরী বলেছেন, ‘হ্যাঁ, কয়েক ধরনের করে রাখছি আমরা। আমাদেরকে বলছে যে, কয়েক ধরনের তৈরি করে রাখতে। আমরা একটা করছি সলো ট্রেনিংয়ের জন্য। একটা করছি গ্রুপ ট্রেনিংয়ের জন্য। আরেকটা করছি শুধু বোলারদেরকে নিয়ে। পেস বোলারই মূলত, স্পিনাররা হয়তো আসবে।’
প্রাথমিক পর্যায়ে সলো ট্রেনিং দিয়েই ক্রিকেট ফেরাতে পারে বিসিবি। এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিসিবির প্রধান চিকিত্সক বলেছেন, ‘প্রথমে হচ্ছে সলো ট্রেনিং। মানে পুরোপুরি আইসোলেশনে থাকবে। দূরত্ব বজায় রেখে। যেমন একজনের জন্য এক ঘণ্টা বরাদ্দ থাকবে। নির্দিষ্ট ক্রিকেটার এসে তার ট্রেনিংগুলো করবে, কিছু স্কিল করল। সব একা একা। সঙ্গে একজন সুপারভাইজার থাকবে, ট্রেনার, ফিজিও থাকবে মাঠে। অন্য আর কেউ থাকবে না। সে চলে গেলে আরেক জন ঢুকবে। প্ল্যানিংগুলো ক্রিকেটারদেরকে আগে দিয়ে দেওয়া হবে। ট্রেনার এসে পরিচালনা করবে। এভাবে একজন একজন করে করলে তো কোনো অসুবিধা নাই।’
গ্রুপ ট্রেনিং বলেই ক্রিকেটারদের সংখ্যাটা বেশি থাকবে। দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, ‘তারপর গ্রুপ ট্রেনিংয়ে ৩ জন আনব আমরা। আইসিসি গাইডলাইন অনুযায়ী এক জন, তিন জন, ১০ জন ও ১০ জনের বেশি। একটা গাইডলাইন দিয়ে রেখেছে। এভাবে আস্তে আস্তে চালু করার জন্য। আমরা ঐ ভাবে তৈরি করে রেখেছি।’
সব দেশ এই গাইডলাইন অনুসরণ করছে না। যেমন শ্রীলঙ্কা অনুশীলন শুরু করেছে ১৩ জন ক্রিকেটার নিয়ে। মেডিক্যাল বিভাগ তৈরি করে রেখেছে, বিসিবির ঊর্ধ্বতন মহল সবুজ সংকেত দিলেই শুরু হবে ক্রিকেটীয় কার্যক্রম। বিসিবির প্রধান চিকিত্সক বলেছেন, ‘আমাদের প্রস্তুত করা আছে। যখন বলবে শুরু করতে, তখন এটা করব। হয়তো আমাদের দুই দিন সময় লাগবে প্রস্তুতির জন্য।’
তবে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারের নির্দেশনা সবার আগে গুরুত্ব পাবে। আইসিসির গাইডলাইনেও তা বলা আছে। সরকারের অনুমতি পেলেই এসব পরিকল্পনা ব্যবহার করে ক্রিকেট শুরুর প্রক্রিয়ায় যেতে পারবে বিসিবি।