আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে: ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক
রাজশাহী-৪(বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এর ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপরে বক্তৃতাকালে বলেছেন, জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। জাতির জনকের কন্যা বাংলাদেশকে বিশ্বে উচ্চ আসরে পরিচিতি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণে দেশের উন্নয়নের চিত্র ফুটে উঠেছে।
এনামুল হক বর্তমান সরকারের সময়ে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেছেন, দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন হয়েছে। এছাড়াও এ সরকারের মেয়াদে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। গতবছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাগমারাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা প্রদান করেছেন।
এনামুল হক দেশের প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের দিক উল্লেখ করে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎখেপনসহ গ্রামাঞ্চলে ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া লেগেছে। সেই সাথে পাতাল ট্যানেল, মেট্রোরেল, মাদার বাড়ি এবং রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মতো কাজ হচ্ছে। এখন গ্রামের লোকজন বাড়িতে বসে চাকরির আবেদন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধসহ বিভিন্ন ধরণের কাজ করতে পারছে। আইটি সেক্টরেও সফল হয়েছে সরকার।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে ৪৩ থেকে ২০ শতাংশ নেমে এসেছে দারিদ্রের হার। সেই সাথে অতি দরিদ্রের হার ১০ ভাগে নেমে এসেছে। গ্রাম শহরে পরিনত হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী সকল ইশতেহার বাস্তবায়ন করে চলেছেন।
এনামুল হক বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর হয়েছে। সারা বিশ্বকে তাকলাগিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেকে উন্নয়নের রুল মডেল হিসাবে দাঁড় করিয়েছেন। এছাড়া সারা বাংলাদেশে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করা হয়েছে পদ্মা সেতু। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর কথার কথা না। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা এখন প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। ফাইবার অপটিকস দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় সংযোগ দেয়া হয়েছে।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে। দেশে মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতার চালু করা হয়েছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ডিজিটাল পদ্ধিতিতে শিশুদের মায়ের মোবাইলে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। এছাড়া শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
এনামুল হক রাজশাহীতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং হাইটেক পার্কের কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, হাইটেক পার্কের ফলে এ অঞ্চলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে । এনামুল হক, বর্তমান সরকারের সময়ে এলাকার বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নের দিক তুলে ধরেছেন। শেখ হাসিনার সরকারের জন্যই এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। তিনি শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন উন্নয়নের দিক উল্লেখ করেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের মধ্য দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার দেশের সার্বিক উন্নয়নের চিত্র ফুটে উঠেছে।
সংসদ সদস্য শিক্ষা বিভাগের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এ সরকারের আমলে বাগমারায় শতভাগ শিক্ষার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয় লেখাপড়া করছে। বর্তমান সরকারের সময়ে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের হার কমেছে। এরই মধ্যে বাগমারার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভূক্ত হলেও বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও এমপিও ভূক্তি থেকে বাদ পড়ে আছে। দ্রুত সেই সকল প্রতিষ্ঠান এমপিও ভূক্তির দাবী করেন তিনি।
উপজেলা পর্যায়ে একটি করে সরকারী ভাবে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। আ’লীগ সরকারের সময়ে কৃষির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কৃষিপণ্য উৎপাদন বেড়েছে। দেশের চাহিদা মেটানোর পর বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হচ্ছে। গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হলে দ্রুত গতিতে দেশের উন্নয়ন ঘটবে। এনামুল হক বাগমারা ছাড়াও জেলার উন্নয়নেরও দাবি জানিয়েছেন।
বক্তৃতায় তিনি হযরত শাহমখমুদ বিমান বন্দরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আর্ন্তজাতিক মানের বিমান বন্দরে উন্নীত এবং কার্গোসার্ভিস চালুর দাবি জানান। হযরত শাহমখমুদ বিমান বন্দর আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হলে এখান থেকেই সরাসরি সৌদি আরবে পবিত্র হজ্ব করতে যেতে পারবেন মুসল্লিরা।
তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সেতু স্থাপনের ফলে উত্তরাঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে। স্বতন্ত্র রেলসেতু স্থাপন করা হলে ব্যবসা বাণিজের আরও প্রসার এবং সুবিধা হবে। সেই সাথে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল হার কমানোরও প্রস্তাব রাখেন। এছাড়া উত্তারাঞ্চলকে পৃথক শিল্প নীতি করারও দাবী জানান তিনি। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ফোর লেন রাস্তা নির্মানের জোর দাবী করেন। এতে একদিকে যানজট যেমন কমবে বাঁচবে সময়ও।
এনামুল হক রাজশাহী অঞ্চলকে কৃষি প্রধান অঞ্চল হিসাবে উল্লেখ করে বলেছেন, হযরত শাহ মখমুদ বিমান বন্দরে কার্গো সার্ভিস চালু করা হলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পন্য দেশের বাইরে পাঠিয়ে ভালো দাম পাবেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। রুপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরের কথা থাকলেও তার আগে উন্নত দেশের দিকে ধাবিত হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শ্রেষ্ঠ জিডিপি অর্জন করেছে।