শিরোনাম

South east bank ad

অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত দ্রুত আলোচনা চান ব্যবসায়ীরা

 প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   গার্মেন্টস/টেক্সটাইল

অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত দ্রুত আলোচনা চান ব্যবসায়ীরা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে চলমান আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। হুমকির মুখে পড়েছে তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক, সিরামিক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, ওষুধসহ দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাত। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতির স্বার্থে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নিতে আন্দোলনকারী ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।

গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে এনবিআরের বর্তমান অচলাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, ‌এনবিআরের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলমবিরতি কর্মসূচির কারণে যথাসময়ে আমদানীকৃত কাঁচামাল খালাস করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। বন্দর, বিমানবন্দরে আমদানি ও রফতানিযোগ্য অনেক পণ্য রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে। আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট এ জটিলতায় এয়ার শিপমেন্ট ও রফতানি আদেশ বাতিল করার হুমকি দিয়েছেন অনেক ক্রেতা। পাশাপাশি পোর্ট ড্যামারেজ নির্ধারিত হারের চার গুণ পরিশোধ করতে হচ্ছে, যা ব্যবসার ব্যয় বাড়াচ্ছে।

এনবিআরে এমন অচলাবস্থায় আমদানিকারকরা ভবিষ্যতে অনাগ্রহ প্রকাশ করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, জুন-জুলাইয়ে তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, পাদুকা, সিরামিক, ওষুধ, প্লাস্টিকসহ সব রফতানিমুখী শিল্প-কারখানায় আগামী শীত মৌসুমের পণ্য তৈরির চাপ রয়েছে। এ জরুরি সময়ে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ও কাস্টম হাউজের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের অচলাবস্থার কারণে সঠিক সময়ে পণ্য রফতানি করতে না পারলে ক্রেতারা ক্রয়াদেশ বাতিল ও ভবিষ্যতে নতুন ক্রয়াদেশ প্রদানে অনাগ্রহী হতে পারেন। এ সুযোগে অর্ডারগুলো পার্শ্ববর্তী দেশে চলে যাবে। উৎপাদিত পণ্য সঠিক সময়ে পাঠাতে না পারলে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসায়িক ও আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে। বর্তমানে দেশের রফতানিমুখী শিল্প নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এমতাবস্থায় এনবিআরে এ জটিলতা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সংবাদ সম্মেলনে চলমান সংকট সমাধানে ব্যবসায়ীদের দাবি তুলে ধরে আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, ‘দেশের ব্যবসায়ীরা একটি দক্ষ, হয়রানিমুক্ত এনবিআর গড়ার লক্ষ্যে সার্বিক সংস্কার বা আধুনিকায়নকে সমর্থন করেন। তবে এনবিআরের চেয়ারম্যানের অপসারণ কোনোমতেই কাম্য নয় এবং তা কোনো প্রকার সফলতা নিয়ে আসবে না। আমাদের দাবি এনবিআরের আন্দোলনকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের আমদানি-রফতানিসেবা বন্ধের কর্মসূচি থেকে সরিয়ে এনে অব্যাহত সেবাপ্রবাহ নিশ্চিত করা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব নীতি প্রণয়ন ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে আলাদাকরণ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর প্রভাবমুক্ত করে এনবিআরের সামগ্রিক আধুনিকায়ন করে পরস্পরের পরিপূরক করে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করা।’

এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এমন আন্দোলনকে আত্মঘাতী বলে মনে করেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশের অর্থনীতির লাইফলাইনের মতো প্রতিষ্ঠান এনবিআরে এমন অচলাবস্থা চলতে পারে না। এনবিআরের কর্মকর্তারা ট্রেড ইউনিয়নের নেতা-নেত্রী না যে শ্রমিকদের মতো নোটিস দিয়ে কর্মবিরতি পালন করবেন। এটি একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কারো কোনো অভিযোগ থাকলে সরকারের সঙ্গে সমাধান করুন। চেয়ারম্যানকে অপসারণ করবে কি করবে না সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত। সংস্কার করার কারণে কাস্টমস বন্ধ করে দেয়া কাম্য নয়।

দেশের স্বার্থে এনবিআরের সমস্যা সমাধান জরুরি বলে মনে করেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। তিনি বলেন, ‘‌এনবিআরে চলমান সমস্যা হচ্ছে ক্ষমতা ও টাকাপয়সা বণ্টন নিয়ে ঝগড়া। মাঝখানে আমরা (ব্যবসায়ী) বিপদে পড়ছি। এনবিআরের কর্মকর্তারা এতদিন আমাদের জ্বালিয়েছে। এখন সরকারকে জ্বালাচ্ছে। দেশের স্বার্থে এ সমস্যার সমাধান জরুরি।’

BBS cable ad

গার্মেন্টস/টেক্সটাইল এর আরও খবর: