শিরোনাম

South east bank ad

বিনিয়োগের অভাবে বাড়ছে রিজার্ভ মানি

 প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০১৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

বিনিয়োগের অভাবে বাড়ছে রিজার্ভ মানি
বিনিয়োগের অভাবে রিজার্ভ মানি জমছে ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জুনে রিজার্ভ মানি ছিল ১ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। গত সেপ্টেম্বর শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকা। এতে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ মানি বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। রিজার্ভ মানি বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেয়া কমিয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে কমানো হচ্ছে ঋণের সুদহারও। এ ছাড়া নীতিনির্ধারণী সুদহার কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে টাকা উত্তোলন কমিয়ে দিয়েছে। ফলে ব্যাংকিং খাতে অলস অর্থ বেড়ে গেছে। অলস অর্থ বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে। এ মুদ্রাবাজারে ঋণের সুদহার সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। গত কয়েক দিন ধরে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে টাকা খাটিয়ে ব্যাংকগুলো মুনাফা পেয়েছে মাত্র আড়াই শতাংশ। যেখানে ব্যাংক আমানত নিতে গ্রাহকদের পরিশোধ করতে হচ্ছে সাড়ে ৮ শতাংশ। জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি ছয় মাস অন্তর মুদ্রানীতি ঘোষণা করে থাকে। এ মুদ্রানীতিতে অর্থনীতির বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন উপকরণ প্রয়োগ করে থাকে। মুদ্রানীতির লক্ষ্য বাজারে টাকার প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়। বাজারে টাকার প্রবাহ বেড়ে গেলে বাজার থেকে টাকা তুলে নেয়ার বিভিন্ন উপকরণ যেমন রিভার্স রেপো, বাংলাদেশ ব্যাংক বিল প্রয়োগ করে থাকে। এতেও নিয়ন্ত্রণে না এলে সিআরআর ও এসএলআর হার বাড়িয়ে দেয়া হয়। অন্য দিকে বাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে টাকার সংকট দেখা দিলে রেপো ও বিশেষ তারল্য সহায়তার আওতায় বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়ানো হয়। বিনিয়োগ স্থবিরতায় বাজারে টাকার প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রায় তিন মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক রিভার্স রেপোর মাধ্যমে বাজার থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। এক দিন থেকে তিন দিন মেয়াদি এ উপকরণের মাধ্যমে গত কোরবানির ঈদের আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা তুলেছে। গত অক্টোবরে গড়ে প্রতিদিন তুলেছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। এখন টাকা তোলার হার কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে হঠাৎ করে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত টাকা তোলা কমিয়ে দিয়েছে। গত ৮ই নভেম্বর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ১৩ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা ফেরত দিতে চেয়েছে ১৮টি ব্যাংক। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়েছে মাত্র ছয় হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা। একই দিন ৯১ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো দিতে চেয়েছে তিন হাজার ৯৮ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়েছে মাত্র ৫০০ কোটি টাকা। একই দিনে এক বছর মেয়াদি ট্রেজারি বিলের বিপরীতে ব্যাংকগুলো দিতে চেয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়েছে ৩০০ কোটি টাকা। একইভাবে গত ৫ই নভেম্বর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে ১৭টি ব্যাংক প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা জমা দিতে চেয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়েছে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা। এর ফলে ব্যাংকগুলোতে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা অলস পড়ে আছে। এক কর্মকর্তা জানান, রিজার্ভ মানি হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্টে থাকা সংরক্ষিত তহবিল এবং সাধারণের হাতে থাকা ও ব্যাংকগুলোর ভল্টে মজুদ টাকা। রিজার্ভ মানি বেড়ে গেলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ব্যাংকাররা জানান, প্রায় সব ব্যাংকের হাতেই এখন অতিরিক্ত টাকা রয়েছে; যে কারণে দৈনন্দিন লেনদেন সম্পন্ন করতে বেশির ভাগ ব্যাংকই এখন আর কলমানি মার্কেট থেকে ঋণ নিচ্ছে না। শুধু আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সীমিত আকারে ঋণ নিচ্ছে। এর ফলে কলমানিতে সুদহারও কমে গেছে।
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: