শিরোনাম

South east bank ad

করোনাকালে ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেন বেড়েছে

 প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

করোনাকালে ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেন বেড়েছে

করোনাকালে মানুষের জীবনযাত্রায় যে পরিবর্তন এসেছিল এখনো তা অব্যাহত আছে। এখন মানুষ ঘরে বসে কাজ করতেই বেশি পছন্দ করছে। সামাজিক দূরত্ব মানতে যেয়েই এমন অবস্থা। ব্যাংকিং লেনদেনেও এর প্রভাব পড়েছে। করোনার সময়ে ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেন অনেক বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে করোনাকালে ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। গত ডিসেম্বরে ইন্টারনেটভিত্তিক গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ লাখ ৪৫ হাজার ৩৩৩ জন। ঐ মাসে ২৩ লাখ ৪৪ হাজার ৪১১টি ইন্টারনেটে লেনদেন হয়েছে। এ মাসে ৮ হাজার ৯৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আগের বছরের একই মাসে ছিল ৬ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের ইন্টারনেটভিত্তিক গ্রাহক ছিল ২৪ লাখ ৭২ হাজার।

ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেন হলো, ব্যাংকে না যেয়েই মোবাইল অ্যাপস বা ওয়েবে গ্রাহক নিজেই ব্যাংকের এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে ফান্ড ট্রান্সফার করা। এক্ষেত্রে অন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্টেও টাকা ট্রান্সফার করা যায়। এছাড়া একই পদ্ধতিতে বিভিন্ন বিল পরিশোধ, মোবাইল টপআপ, অ্যাকাউন্টের লেনদেনের সার্বিক বিবরণী, ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ, ব্যালান্স দেখা, বকেয়া দেনার হিসাব ও পরিশোধ সীমা দেখার মতো কাজগুলো করতে পারেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইন্টারনেট ব্যাংকিং শুরু করতে পারলে ব্যাংকগুলোর ব্যাংকিং করা সহজ হবে। অনেক ব্যাংক ইতিমধ্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং জনপ্রিয় করতে মোবাইল অ্যাপসও তৈরি করেছে।

অন্যদিকে অনলাইনভিত্তিক ব্যাংকিং হলো ব্যাংকের নিজস্ব আয়োজন। যেখানে লেনদেনের ক্ষেত্রে শাখায় যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এটা মূলত ব্যাংকের সিবিএস (কোর ব্যাংকিং সলিউশন) সফটওয়্যারের মাধ্যমে দেশের যে কোনো প্রান্তের শাখা থেকে একজন গ্রাহক সম্পর্কে জানতে পারা যায় কিংবা টাকা জমা ও উত্তোলন করা যায়। দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে শাখার দিক থেকে সবচেয়ে বড় হলো সোনালী ব্যাংক। এ ব্যাংকের ১ হাজার ২২৫টি শাখা এখন অনলাইনের আওতায় এসেছে। ইন্টানেট ব্যাংকিং বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান প্রধান ইত্তেফাককে বলেন, আমাদের শাখাগুলো অনলাইন নির্ভর হওয়ার কারণে এখন যে কোনো শাখা থেকে মানুষ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারছে। আরটিজিএস (রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট)-এর মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারছেন গ্রাহকরা। আর ইতিমধ্যেই আমরা চালু করেছি ঘরে বসে মাত্র ৫ মিনিটে অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি। এতে আমরা বেশ সাড়া পেয়েছি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বিডিবিএল ও বেসিক ব্যাংকের প্রায় ৪ হাজার শাখা রয়েছে। এসব শাখায় সিবিএস (কোর ব্যাংকিং সলিউশন)-এর আওতায় শতভাগ অনলাইন সুবিধা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। গ্রাহকদের ইন্টারনেট লেনদেনের সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এখনো আসতে না পারার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহে দক্ষ জনবলের অভাব ও শাখার সংখ্যা বেশি হওয়ায় দ্রুত অনলাইন প্রযুক্তি গ্রহণে সক্ষম হচ্ছে না।

এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের শাখা শহরকেন্দ্রিক হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর শাখা পল্লি­ এলাকায় বেশি। গ্রামে হওয়ায় গ্রাহকের পাশাপাশি ব্যাংকের কর্মকর্তারাও তুলনামূলক কম প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৬১ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৪০টিই ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে। দিন দিন অনলাইনে লেনদেনের এ ব্যাংকিং সেবা জনপ্রিয় হচ্ছে। ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধাজনক হওয়ায় দেশীয় গ্রাহকের চেয়ে বিদেশিরাই আগ্রহ দেখাচ্ছে বেশি। ইন্টারনেট ব্যাংকিং বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামস-উল-ইসলাম বলেন, অগ্রণী ব্যাংকে হতদরিদ্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক রয়েছে। এসব গ্রাহকের এখনো ইন্টারনেট ব্যবহার করতে অভ্যস্ত হয়নি। তবে বড় গ্রাহকদের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে আমাদের ইন্টানেট ব্যাংকিং শুরু করার চিন্তাভাবনা আছে।

বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে একজন গ্রাহক দিনে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত স্থানান্তর করতে পারেন। প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা পাঠানো যায়। দিনে লেনদেন করা যায় সর্বোচ্চ ১০টি। আর কোনো প্রতিষ্ঠান এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত পাঠাতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ সীমা ২ লাখ টাকা। এক দিনে সর্বোচ্চ ২০টি লেনদেন করা যায়।

BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: