এক দিনে 'নগদ' এর লেনদেন ৯৫০ কোটি টাকা

ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ-এর প্রতিদিনের লেনদেনের পরিমাণ এখন হাজার কোটি টাকা ছুঁইছুঁই। গত বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) ৯৫২ কোটি ৭১ লাখ টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
এতদিন গড়ে সাতশ থেকে সাড়ে সাতশ কোটি টাকা লেনদেন করলেও ঈদের আগের এই সময়টাতে লেনদেনের পরিমাণ বাড়তে থাকে।
এ বিষয়ে নগদ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, উদ্ভাবনী প্রচেষ্টার অগ্রযাত্রায় মাত্র তিন বছরের মধ্যে ‘নগদ’ ৯৫০ কোটি টাকা লেনদেনের মাইলফলক ছুঁয়েছে এটি তাদের জন্য অনেক আনন্দের একটি সময়।
তিনি বলেন, বরাবরই ঈদের সময় মানুষ অনেক বেশি লেনদেন করে। তাবে এখন মানুষ আর ছাপানো টাকা খুব একটা বহন করতে চায় না। সে কারণে মোবাইল লেনদেন বিশেষ করে ‘নগদ’ জনপ্রিয় হচ্ছে।
মাত্র তিন বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে উদ্বোধনের পর একদিনে লেনদেন হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি চলে আসাকে নগদ-এর আধুনিক সেবা এবং বাংলাদেশে ক্যাশলেস সমাজ প্রতিষ্ঠার বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মূলত ঈদকে সামনে রেখে ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীক পর্যায়ের লেনদেনের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদের মৌসুমে কেনাকাটা, বেতন ভাতা পরিশোধ এবং প্রিয়জনের জন্য ঈদের খরচ পাঠানোর ক্ষেত্রে এখন নগদ-কে বেছে নিয়েছেন অধিকাংশ মানুষ। সে কারণে লেনদেনের পরিমাণ এতটা বেড়েছে।
তবে সম্প্রতিক সময়ে নগদ-এর মাধ্যমে প্রতিদিনকার গড় লেনদেন সাতশ কোটি টাকার ওপরে ছিল।
৯৫০ কোটি টাকার মধ্যে বড় দুটি অঙ্ক ক্যাশ ইন এবং ক্যাশ আউট। এজেন্টের মাধ্যমে সরাসরি ক্যাশ-ইন হয়েছে ২২০ কোটি টাকার বেশি। তাছাড়া কার্ড এবং ব্যাংক থেকে অ্যাড মানি হয়েছে আরো দশ কোটি টাকা। সরকারি ভাত ও অন্যান্য সহায়তা বিতরণ আছে পৌনে তিনশ কোটি টাকার বেশি।
নগদ-এর ক্যাশ-আউট চার্জ খুবই কম হওয়ায় গ্রাহকেরা টাকা লেনদেনের জন্য সব সময়ই এই সেবাটিকে খুবই পছন্দ করেন। বৃহস্পতিবার সব মিলে ক্যাশ-আউট হয়েছে ২৩৭ কোটি টাকা।
পি টু পি এবং মার্চেন্ট পেমেন্ট মিলে বৃহস্পতিবার আরো প্রায় ২০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
কম খরচে আধুনিক সেবা দেওয়ার পাশাপাশি কোভিড সময়কালে সরকারি বিভিন্ন ভাতা, উপবৃত্তি, আর্থিক সহায়তা বিতরণে ডিজিটালাইজেশনের প্রচলন করে ভাতাভোগীর হাতে সহজেই সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং সরকারি অর্থের সাশ্রয় করার মতো কাজ করেও সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে ‘নগদ’।
২০১৯ সালের ২৬ মার্চ উদ্বোধনের পর মাত্র দশ মাসে এক কোটি গ্রাহকের ল্যান্ডমার্ক অতিক্রম করে ’নগদ’। পরের এক কোটি গ্রাহক পেতে সময় লাগে মাত্র ছয় মাস। দুই কোটি থেকে তিন কোটিতে আসতে সময় লাগে আরও সাত মাস। আর শেষ এক কোটি গ্রাহক পেতে সময় লেগেছে দুই মাসেরও কম সময়।
এক দিনে নগদ প্রথম ৫০০ কোটি টাকার লেনদেন করে ২০২১ সালের ৬ মে। ওই একই মাসে ছয়শ কোটি এবং সাতশ কোটি টাকার লেনদেনের অংক পেরিয়ে যায় অপারেটরটি।
নগদের উদ্ভাবনী সব সেবার কারণে শুরু থেকেই লেনদেনের পরিমাণও বাড়তে থাকে আশানুরূপভাবে। নগদের দ্রুতগতির অগ্রযাত্রাকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং গ্রাহকবান্ধব সেবা চালু করার সফল সম্মিলন বলে মনে করেন নগদ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
তিনি বলেন, ‘প্রচলিত সব পরিষেবা যাতে নগদ-এ পাওয়া যায় তার জন্য আমরা কাজ করছি। আর সে জন্য প্রতিদিনিই আমরা অসাধ্য সাধনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। *১৬৭# নম্বরে ডায়াল করে পিন সেট করার মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলা পৃথিবীর আর কোথাও না থাকলেও ‘নগদ’ সেটি সম্ভব করেছে। অথচ একসময় একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে কত কিছুই না করতে হতো। এসব কারণেই নগদ-এ লেনদেন বাড়ছে বলেও মনে করেন তিনি।
গ্রাহক নিবন্ধনের জন্য দেশের আর্থিক খাতে প্রথমবারের মতো ই-কেওয়াইসি চালু করে সাড়া ফেলে নগদ। বর্তমানে নগদ-এর গ্রাহক সংখ্যা ৬ কোটি ২৫ লাখ পেরিয়ে গেছে। বিস্তৃত সেবা নেটওয়ার্ক নগদ-কে সাফল্য পেতে সহায়তা করেছে বলে মনেকরেন সংশ্লিষ্টরা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি