নিজস্ব সম্পদের তথ্য জানাতে ৫দিনের সময় পেল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিকে নিজস্ব সম্পদের তথ্য জানাতে ৫দিন সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গঠিত এ বিষয়ক কমিটি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকদের কাছে দেনার তথ্য জানাতে ৭দিন এবং মার্চেন্টদের কাছে দেনার তথ্য জানাতে ২১ দিন সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি।
বুধবার কমিটির প্রথম বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ এ বিষয়ে ইভ্যালিকে চিঠি দেওয়ার কথা রয়েছে। চিঠি পাঠানোর দিন থেকে সময় হিসেব করবে কমিটি।
এর আগে গত ১৯ জুলাই ইভ্যালির বিরুদ্ধে কেন আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ইভ্যালিকে ওই নোটিশের জবাব দিতে ১ আগষ্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু ইভ্যালি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব না দিয়ে ৬ মাস সময় চেয়ে আবেদন করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল।
এরপর ইভ্যালি বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষকে প্রধান করে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশনের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান হাফিজুর রহমানও এই কমিটির সদস্য। বুধবার কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানেই এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইভ্যালির বিরুদ্ধে ক্রেতার থেকে আগাম টাকা নিয়ে সময়মত পণ্য সরবরাহ না করা এবং মার্চেন্টদের পাওনা পরিশোধ না করার অভিযোগ ওঠে। তার প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইভ্যালিতে তদন্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদন্ত করে গত ১৬ জুন প্রতিবেদন জমা দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে দেখা গেছে, গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত ক্রেতাদের থেকে ২১৪ কোটি এবং মার্চেন্টদের(যাদের থেকে পণ্য সংগ্রহ করে ক্রেতাদের দেওয়া হয়) কাছে ১৯০ কোটি টাকা দায় রয়েছে। ওই সময়ে ইভ্যালির কাছে সম্পদ ছিলো প্রায় ৯২ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৬৫ কোটি টাকা চলতি মূলধন। ক্রেতা ও মার্চেন্টদের বিপুল পরিমাণ টাকা তাহলে কোথায় গেলো এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক পরিস্থিতির এ চিত্র উঠে আসার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ক্রেতা ও মার্চেন্টদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে ইভ্যালির কাছে গ্রাহকের বকেয়া পাওনার তথ্য এবং ভবিষ্যতে কিভাবে এসব দেনা পরিশোধ করা হবে তার পরিকল্পনা জানতে চায়। একইসঙ্গে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের সুরক্ষা এবং ডিজিটাল কমার্স খাতের নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধের লক্ষ্য ইভ্যালির বিরুদ্ধে কেন আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়।
৬ মাসের সময় চেয়ে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল তার চিঠিতে বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তের সময়ে সময় স্বল্পতার কারণে সকল তথ্য সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত চিত্র ওই তদন্তে উঠে আসেনি। এখন তিনি একটি নিরপেক্ষ নিরীক্ষকের মাধ্যমে কোম্পানির আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত ও ভ্যালুয়েশন করে উপস্থাপন করতে চান। এজন্য ৬ মাস সময় প্রয়োজন। ওই আর্থিক বিবরণীতে কোম্পানির মোট সম্পদ, দেনার পরিমানসহ যাবতীয় তথ্য থাকবে।