প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ। তিনি আজ ৬৯ বছরে পা রাখলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ রাজনীতির এক দুঃসময়ে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে সভানেত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই থেকে তিন দশকের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে নিজেকে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতির কাণ্ডারি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শেখ হাসিনা ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং ১৯৮৬, ১৯৯১ ও ২০০১ সালের সংসদে বিরোধী দলের নেতার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতের নির্মম ঘটনায় দুই কন্যা ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে শাহাদতবরণ করেন। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের এক ক্রান্তিকালে দলের নেতৃত্ব গ্রহণের পর শেখ হাসিনার দীর্ঘ সংগ্রামের পথ ধরে দলকে সুসংগঠিত করেন। তারই পথ বেয়ে বিপুল জনরায় নিয়ে ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসে। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আট বছর পর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় অর্জন করে আবারও ক্ষমতায় আসে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসে সরকার পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব পালন করছেন। টানা দুই দফায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন। বিশেষ করে এক সময়ের হতদরিদ্র বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মজবুত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে নিুমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা, মা ও শিশুমৃত্যু হার কমিয়ে আনা, নির্ধারিত সময়ের আগেই এমডিজি অর্জন, ডিজিটাল বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নতি, জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় নিজস্ব অর্থায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরুসহ বিভিন্ন সফল কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন অন্যতম বিশ্ব নেত্রীর মর্যাদায় ভূষিত হয়েছেন। সাধারণত অনাড়ম্বর পরিবেশে দলের নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা জন্মদিন পালন করেন। অগণিত নেতাকর্মী, ভক্ত-অনুরাগী ও শিশুদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে জন্মদিনের আনন্দ ভাগাভাগি করেন তিনি। দেশে থাকলে এ রকম অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই পালিত হতো আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর জন্মদিন। কিন্তু এ বছরও জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে রয়েছেন। জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। গত বছরও তিনি এ সময় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিনে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে ফুলের তোড়া উপহার দেয়া হবে। আজ বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আজ বিকাল ৪টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর ১২টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এবং প্যাগোডা, গির্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এতিমখানাসহ দুস্থদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করা হবে। জন্মদিনের কর্মসূচি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ দলের সব শাখা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।