স্টার্টআপে অর্থায়নের নতুন নীতিমালায় ঋণের সীমা বেড়ে ৮ কোটি টাকা

বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতিতে স্টার্টআপ খাতকে প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও উদ্ভাবনের অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এ খাতের অর্থায়ন কাঠামোয় বড় পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। স্টার্টআপ ফান্ড-সংক্রান্ত নতুন মাস্টার সার্কুলারে ঋণসীমা বৃদ্ধির পাশাপাশি ইকুইটি বিনিয়োগ ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি গঠনের প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা গতকাল দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বরাবর পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো সাধারণত দুই ধরনের তহবিল থেকে স্টার্টআপে ঋণ বিতরণ করে থাকে। একটি হলো ব্যাংকের নিজস্ব স্টার্টআপ ফান্ড। মূলত বার্ষিক নিট মুনাফার ১ শতাংশ দিয়ে এ তহবিল গঠন করা হয়। আরেকটি হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল। উভয় তহবিল থেকেই ঋণ বিতরণের বয়স ও ঋণসীমাসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন সার্কুলারে এ-সংক্রান্ত নিয়মনীতিতে শিথিলতা আনা হয়েছে।
স্টার্টআপ খাতে আগে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করা যেত। এক্ষেত্রে উদ্যোক্তার বয়সের সীমা ছিল ৪৫ বছর। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী ২১ বছর বয়সোর্ধ্ব যে কেউ এ ঋণ নিতে পারবেন। আর প্রতিষ্ঠানের কার্যকাল অনুযায়ী ঋণ নিতে পারবে ২-৮ কোটি টাকা পর্যন্ত।
আগে স্টার্টআপ তহবিল থেকে শুধু ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা দেয়া যেত। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, তফসিলি ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব স্টার্টআপ ফান্ড থেকে ইকুইটি বিনিয়োগ করতে পারবে। এ বিনিয়োগ সহজতর করতে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ কোম্পানির প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসএমই ও স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগ। এ প্রতিষ্ঠানে তফসিলি ব্যাংকগুলো তাদের স্টার্টআপ ফান্ডের অর্থ ইকুইটি হিসেবে বিনিয়োগ করবে। এটি ব্যাংকের আর্থিক বিবরণীতে অন্যান্য দায়ের পরিবর্তে স্টার্টআপ ইকুইটি বিনিয়োগ ফান্ড হিসেবে গণ্য হবে।
স্টার্টআপ ফান্ডে গ্রাহক পর্যায়ে মেয়াদি ও চলতি মূলধন ঋণের সর্বোচ্চ সুদ ৪ শতাংশ হারে নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সুদহার ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চক্রবৃদ্ধি হারে গণনা করা হবে। এ সুবিধা বিদ্যমান ও নতুন—উভয় ধরনের স্টার্টআপের জন্য প্রযোজ্য হবে। তবে বিদ্যমান স্টার্টআপের নিবন্ধনের সময় থেকে সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানগুলো এ সুবিধার আওতায় আসবে।
এ সার্কুলার জারি হওয়ার পর ব্যাংকগুলো নিজেদের স্টার্টআপ ফান্ড থেকে নতুন কোনো ঋণ বিতরণ করতে পারবে না। তবে আগে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর অর্থ ছাড় করতে পারবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।