টিকার দেবার কথা বলে টাকা নিলেন প্রধান শিক্ষক
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া):
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মুলতানি পারভীন শাহজাহান তালুকদার (এমপিএসটি) উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টিকার কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরের দিকে ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় এ উপজেলাতেও ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সের শিক্ষার্থীদের ৯ জানুয়ারি থেকে করোনাভাইরাসের টিকার কার্যক্রম শুরু করা হয়। এ কার্যক্রম চলেছে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের কেন্দ্র করা হয়েছিল উপজেলা পরিষদের শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত সভাকক্ষে। মুলতানি পারভীন শাহজাহান তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয়ের ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী এই কেন্দ্রে টিকা গ্রহণ করেছে।
ওই বিদ্যালয় থেকে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষের দুরত্ব প্রায় ১১ কিলোমিটার। বিদ্যালয় থেকে টিকা কেন্দ্রে পৌছার জন্য পরিবহন খরচসহ অন্যান্য খরচ বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৬০ টাকা করে মোট ৭২ হাজার টাকা আদায় করেছেন প্রধান শিক্ষক।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে শিক্ষার্থীদের টিকা কেন্দ্রে পৌছানোর কথা থাকলেও শ্যালোইঞ্জিন চালিত ভটভটিতে গাদাগাদি করে পৌছানো হয়। এতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর খরচ হয়েছে ৪০ টাকা করে মোট ৪৮ হাজার টাকা। অবশিষ্ট ২৪ হাজার টাকা প্রাধান শিক্ষক আত্মসাত করেছেন।
এদিকে ১২ জানুয়ারি বিদ্যালয় থেকে ভটভটিতে গাদাগাদি করে টিকা কেন্দ্রে পৌছানোর সময় পথিমধ্যে দুর্ঘটানায় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম ও সোহেল রানা আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম, সোহেল রানা, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন ও বন্যা খাতুনসহ অনেকে জানায়, বিদ্যালয় থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নিরাপদে টিকা কেন্দ্রে পৌছানোর কথা বলে ৬০ টাকা করে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু তাদের পৌছানো হয়েছে ভটভটি করে। বিদ্যালয় থেকে টিকা কেন্দ্রে প্রতিজনের ভটভটি ভাড়া ৪০ টাকা করে। ভটভটিতে পৌছানোর কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তারা আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে আছমা খাতুন নামে এক অভিভাবক বলেন, অটোরিকশায় পৌছানোর জন্য ৬০ টাকা করে নিয়ে ভটভটিতে করে পৌছাতে গিয়ে আমার ছেলে আহত হয়েছে। তাকে চিকিৎসায় এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে লক্ষাধিক টাকা। আরো টাকা খরচ হবে। শিক্ষকদের এমন দায়িত্বহীনতার বিচার চান তিনি।
এমপিএসটি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফছার আলী বলেন, সব শিক্ষার্থীর কাছে থেকে ৬০ টাকা করে আদায় করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে শিক্ষার্থীদের টিকা কেন্দ্রে পৌছাতে ৪ হাজার টাকা বিদ্যালয় তহবিল থেকে ভূর্তকি দেওয়া হয়েছে।
ধুনট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, বিষয়টি আমি অন্যভাবে জেনেছি। তবে কেউ কোন অভিযোগ করেননি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।