আড়াইহাজারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাত হবে ঈদগাহে
মো: ফেরদৌস রহমান (আড়াইহাজার):
মহামারী করোনা সংক্রমণের কারণে ২০১৯ সাল থেকে দেশের অনেক কিছুতে আরোপ করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। তার মধ্যে ছিল পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা এর নামাজ ঈদগাহে গিয়ে পড়ার নিষেধাজ্ঞা। মসজিদেও ওয়াক্ত নামাজের জামাতে ৫ জন, কোনো সময় তারাবির নামাজে ২০ জনের বেশি মুসল্লী জড়ো হওয়াও ছিলো নিষেধ। দেশের গত চারটি ঈদের নামাজ মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির ফলে এই সরকারি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার । ফলে মানুষের মন থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল ঈদের আমেজ। ঈদগাহে গিয়ে ঈদের নামাজ না পড়তে পারলে ঈদ আনন্দ যেন ফুটে ওঠেনি অনেকের মনে। কিন্তু এবছর কঠোর লকডাউন শিথিল করে দেশের কুরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে পশু হাট বসানো সহ দেশের যানবাহন চলাচল, শপিংমল, মার্কেটগুলো ও কাঁচাবাজারগুলো খোলার অনুমতি মিলেছে। এতে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসেছে কুরবানির পশু হাট। কিছু হাটে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হলেও কেউ কেউ সচেতনতা অবলম্বনেও ছিলো তৎপর। স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়েই হাটে কেউ বিক্রি করতে গেছেন পালিত পশু আবার কেউবা কিনতে গেছেন পছন্দের পশুটি। দীর্ঘ লকডাউন বিরতি যেন আকাশ ভ্রমণের ন্যায় মনকে প্রফুল্লতা এনে দিয়েছে জনমনে। আর ২০২১ সালের ঈদ-উল-আযহা এর ঈদের নামাজ মসজিদে নয় বরং ঈদগাহেও পড়তে পারবে শুনে, অনেকে আনন্দে আত্মহার হয়ে পড়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলায় এবার প্রতিটি ঈদগাহে ঈদের জামাত স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পড়ার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন। আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ হোসেন আমাদের জানায় যে, " ধর্ম মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এবার কুরবানির ঈদের নামাজ মসজিদের পাশাপাশি ঈদগাহেও পড়া যাবে। তাই আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি সকল প্রকার নিয়ম নীতি অনুসরণ করে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদগাহে গিয়ে ঈদের নামাজ পড়ার।" সেই সাথে দেশবাসীকে আড়াইহাজার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।
দীর্ঘ ২ বছর ঈদগাহে গিয়ে নামাজ পড়ার অনুমতি মিলেছে দেখে অনেকেই খুশি। গোপালদী নজরুল ইসলাম বাবু কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া আরমান বলেন, " ছোটকাল থেকে ঈদের নামাজ ঈদগাহে পড়ে আসছি, কিন্তু মহামারী করোনার কারণে দুইটি বছর মসজিদে পড়তে হয়েছে। ফলে ঈদের আনন্দ আমাদের মনে তেমন জেগে ওঠেনি। এইবার ঈদগাহে নামাজ পড়তে পারবো ভেবে খুবই ভালো লাগছে।"
রিকশা চালাক করিম জানায়, " দুইবছর ঈদগাহে নামাজ না পড়াতে মনে হচ্ছে যেন কতবছর ঈদগাহে নামাজ পড়ি না। সরকারকে ধন্যবাদ এবার ঈদগাহে নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়ায়। ছোট ছেলে-মেয়েগুলোও ঈদগাহে গিয়ে নামাজ পড়ার আনন্দ নিতে পারবে।"
ঈদ আনন্দের আর সমৃদ্ধির। ঈদ মানেই জীবন আনন্দের ঘনঘটার বহিঃপ্রকাশ। ঈদ সকলের জীবনে আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে, কেউ কেউ আবার বঞ্চিত হয় সেই আনন্দ থেকে। তাই ঈদ জনমনে আনন্দ নিয়ে আসবে এমনটাই সকলের কামনা।