টুং-টাং শব্দে মুখরিত সাতক্ষীরার তালা উপজেলার কর্মকারবাড়ি
এম এ জামান (সাতক্ষীরা):
আর মাত্র কয়েকদিন বাদেই আসছে কোরবানির ঈদ। কোরবানীর ঈদে সামনে রেখে টুং-টাং শব্দে মুখরিত তালা উপজেলার কর্মকারবাড়িগুলো। তবে কয়লার দাম বেশি হওয়ায় অন্যবারের চেয়ে এবারে দা-বটি, ছুরি ও চাপাতির দাম কিছুটা বেশি বলেও জানা গেছে।
বিভিন্ন এলাকার কামারশালা ঘুরে দেখা যায়, ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে কর্মকারদের ব্যস্ততা। সামনে আগুনের শিখায় তাপ দিয়ে ও হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি হচ্ছে দা-বটি, চাপাতি ও ছুরি। প্রাচীন কালের সেই অসাধারণ টুং-টাং শব্দে তৈরি হচ্ছে এসব যন্ত্রপাতি। পশু কোরবানিতে এসব অতীব প্রয়োজনীয়। কোরবানিদাতারা কোরবানির প্রাণি জবাই করার অস্ত্র, পরিবারের ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত দা-বটি ও ছুরি শাণ দেয়ার জন্যে নিয়ে আসছেন কর্মকারদের কাছে। তবে প্রাচিন কালের ন্যায় এখন মোটর চালিত মেশিনে শাণ দেয়ারও কাজ করছেন কর্মকাররা। তাই যেন দম ফেলারও সময় নেই কার্মকারদের। চলমান করোনা সংক্রমণের কারণে অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে উদযাপন হবে পবিত্র ঈদুল আজহা।
জাতপুর কর্মকার পাড়ার উদয় কর্মকার ও প্রহ্লাদ এবং ভগীরত কর্মকার বলেন, প্রায় ৪০ বছর যাবৎ এ পেশায় জড়িত। এর আগে বাবা ঠাকুরদারা এই শিল্পের কারিগর ছিলেন। কুরবানীর ঈদ আসলেই আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। আমরাও এ সময়ের অপেক্ষায় থাকি। দেশি চাপাতিগুলো কেজি হিসেবে বিক্রি হয় থাকে। প্রতি কেজি চাপাতির দাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়া বিদেশি চাপাতির দাম ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত।
তালা মাগুরায় কর্মকার বাড়ির জয়দেব বলেন, কুরবানির ঈদের আগে এক সপ্তাহ ভালো বেচাকেনা হয়। এই সময় দামও ভালো পাওয়া যায়। লোহার তৈরি ছোট ছুরি ৬০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জবাই ছুরি মিলছে ৫০০-৬০০ টাকায়। বিভিন্ন সাইজের চাপাতি ৬০০-৮০০ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। দা-বটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০০ টাকায়।
এদিকে ক্রেতারা বলেন, কুরবানির ঈদের আর কয়েকদিন বাকি। তাই আগেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম তৈরি ধার দেওয়ার ও কেনার কাজটি সেরে ফেলছেন। তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার ছুরি, চাকু, কাটারির দাম একটু বেশি বলে জানান তারা।