মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করলেন মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি
নাম পরিচয় বলতে না পারা মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী পথেই যার ঠিকানা খেয়ে না খেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। গত রোববার ৪ জুলাই ২০২১ইং তারিখ বিকেলে পায়ে ক্ষত হয়ে পোকা ধরা রোগ (গ্যাংরিন) নিয়ে রাস্তার ধারে পড়ে থাকা ওই নারীকে মানিকগঞ্জ পৌরসভার নয়াকান্দি থেকে উদ্ধার করেন মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) নজরুল ইসলাম। ওসি এ মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর চিকিৎসার জন্য মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
গত রোববার বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ কর্মকর্তা ডিউটিরত অবস্থায় পৌরসভার নয়াকান্দি এলাকায় পড়ে থাকা ভারসাম্যহীন নারীটিকে দেখে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নারীটিকে চিকিৎসা দিতে নানা তালবাহানা শুরু করে এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে।
পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তা তার নিজ খরচে মানসিক ভারসাম্যহীন এ নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে ওই নারীকে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে সেখান থেকেও তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
পুলিশের সহযোগিতায় ওই নারীকে গভীর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হলে এখানেও মিটফোর্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা সেবা দিতে গড়িমসি করে।
পরে রাত ৩টার দিকে আবার তাকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অবশেষে পুলিশের সহযোগিতায় গত সোমবার সকাল ৮টার দিকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে মানসিক ভারসাম্যহীন এ ভারসাম্যহীন নারীকে ভর্তি করে।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, গত রোববার ভারসাম্যহীন এ নারীকে পায়ে ক্ষত নিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। অসুস্থ এ নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে আমার দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় অথচ সব পেশার ঊর্ধ্বে মানবতা। সেই মানবতা আজ বিপন্ন। পায়ে ক্ষত নিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী চিকিৎসার অভাবে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেও কেউ এগিয়ে আসেনি। মানসিক ভারসাম্যহীন নারীটিকে চিকিৎসা সেবা দিতে কেউ গড়িমসি না করে সঠিক চিকিৎসা দিয়ে বাঁচিয়ে তুলতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মো. আরশাদউল্লাহ বলেন, আমাদের হাসপাতালে সাইকিয়াট্রিট বিভাগ না থাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে ঢাকা মেকিল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। এখন সে আমাদের এখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে।