শিরোনাম

South east bank ad

রমজানের অন্যতম ইবাদত তারাবির নামাজ: মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব

 প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ইসলাম ও জীবন

রমজানের অন্যতম ইবাদত তারাবির নামাজ: মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

রোজার ইবাদতের মধ্যে অন্যতম তারাবি। আরবি তারবিহা শব্দের বহুবচন তারাবি। তারবিহা মানে বিশ্রাম, স্বস্তি, শান্তি ও প্রশান্তি। রমজানে এশার নামাজের পর যে ২০ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদার নামাজ আদায় করা হয়, তাকেই তারাবির নামাজ বলে।সূত্র : আল কামুসুল ফিকহ

রমজান ছাড়া আর কখনো তারাবির নামাজ পড়া যায় না। রাসুলুল্লাহ (সা) নিজে তারাবির নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবাদের উৎসাহিত করেছেন। এ নামাজ নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা। বাঙালি মুসলমানের এ ধর্মীয় ইবাদতে যোগ দেয় কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধ। অংশ নেয় ধনী-গরিব সবাই। উৎসবমুখর আয়োজনে উৎযাপিত হয় তারাবি। আদায় করেন ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে। অনেকটা কবি জসীমউদ্দীনের কবিতার মতো। কবি জসীমউদ্দীন বলেছেনÑ ‘তারাবি নামাজ পড়িতে যাইব মোল্লাবাড়িতে আজ/মেনাজদ্দীন, কলিমদ্দীন, আয় তোরা করি সাজ/চালের বাতায় গোঁজা ছিল সেই পুরাতন জুতা জোড়া/ধুলাবালু আর রোদ

লেগে তাহা হইয়াছে পাঁচ মোড়া/ তাহারি মধ্যে অবাধ্য এই চরণ দুখানি ঠেলে/চল দেখি ভাই খলিলদ্দীন, লণ্ঠন-বাতি জ্বেলে/ ঢৈলারে ডাক, লস্কর কোথা, কিনুরে খবর দাও/ মোল্লাবাড়িতে একত্র হব মিলি আজ সারা গাঁও।’

তারাবির গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রার (রা.) সূত্রে মহানবী (সা) বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়বে, তার অতীতের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (বুখারি, শরিফ : ৩০)।

হজরত আয়েশা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) একবার রমজান মাসে রাত্রিবেলায় মসজিদে নববীতে নামাজ (তারাবি) আদায় করলেন। উপস্থিত লোকজনও তার সঙ্গে নামাজ আদায় করলেন। একইভাবে তারা দ্বিতীয় দিনেও নামাজ আদায় করলেন এবং লোকসংখ্যা অনেক বেশি হলো। অতঃপর তৃতীয় এবং চতুর্থ দিনেও মানুষ একত্রিত হলো। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা) হুজরা থেকে বেরিয়ে তাদের কাছে এলেন না। অতঃপর সকাল হলে তিনি এলেন এবং বললেন, তোমাদের অপেক্ষা করার বিষয়টি আমি লক্ষ করেছি। কিন্তু শুধু এ ভয়ে আমি তোমাদের নিকট আসা থেকে বিরত থেকেছি যে, আমার আশঙ্কা হচ্ছিল, না জানি তোমাদের ওপর তারাবি ফরজ করে দেওয়া হয়। (বুখারি শরিফ)।

তারাবি বিশ রাকাত সুন্নাত। এটা রাসুল (সা) সাহাবি, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈন এবং মুজতাহিদ ইমামগণের আমল দ্বারা প্রমাণিত। হজরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা) রমজান মাসে বিশ রাকাত এবং বেতের পড়তেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা)। সমস্ত সাহাবিদের আমলেও বিশ রাকাত ছিল। রাসুল (সা)-এর নাতি হজরত আলী ইবনে হাসান (রা) থেকে বর্ণিত, হযরত ওমর (রা)-এর নির্দেশে লোকদেরকে নিয়ে উবাই বিন কাব (রা) ২০ রাকাত তারাবি পড়েছেন। (আবু দাউদ)। এভাবে খলিফা ওমর, ওসমান, আলী (রা)সহ সব সাহাবিদের ঐকমত্যে ২০ রাকাত তারাবি পড়া হয়েছে।

তারাবির নামাজের নিয়ম হলো, দুই রাকাত করে তারাবির নামাজ আদায় করতে হয়। দুই দুই রাকাত করে প্রতি ৪ রাকাত পরপর কিছু সময় বিশ্রাম। বিশ্রামের এ সময়টিতে তাসবিহ-তাহলিল ও আল্লাহর কাছে দোয়া করা। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। যে কোনো সুরা দিয়ে তারাবির নামাজ আদায় করা যায়।

পুুনশ্চ : রোজা একটি সতন্ত্র ইবাদত। তারাবির নামাজ আলাদা ইবাদত। তারাবি না পড়লে রোজা হবে না এমন ধারণাটি ভুল। আবার তারাবির নামাজ সুন্নত। কারও সঙ্গে ঝগড়া বা গালমন্দ করা হারাম। তারাবি নামাজের রাকাত নিয়ে ফেকহি আলোচনা হতে পারে, তবে বিদ্বেষমূলক কথা বা গালমন্দ হারাম। ইবাদতে মনযোগী হই। গালমন্দকে না বলি!

সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম

BBS cable ad