টুজি ও থ্রিজির রেভিনিউ শেয়ারের ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট প্রদানে অব্যাহতি পেল সেলফোন অপারেটররা

সেলফোন অপারেটরদের টুজি ও থ্রিজি সেবা থেকে প্রাপ্ত আয়ের ভাগাভাগির (রেভিনিউ শেয়ারিং) ওপর প্রযোজ্য মূল্য সংযোজন কর (মূসক) প্রদানে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) অপারেটরদের প্রদেয় এ মূসক অব্যাহতি দিয়ে সম্প্রতি বিশেষ আদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
আদেশে বলা হয়, সেলফোন অপারেটররা গ্রাহকদের কাছ থেকে যে সেবামূল্য আদায় করে, তার ওপর ১৫ শতাংশ হারে মূসক পরিশোধের পর প্রাপ্ত নিট অর্থ থেকে রেভিনিউ শেয়ারিং বাবদ সাড়ে ৫ শতাংশ বিটিআরসিকে প্রদান করে। টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্স ব্যবহারের শর্ত অনুযায়ী এ অর্থ প্রদান করছে অপারেটররা।
এতে বলা হয়েছে, রেভিনিউ শেয়ারিং হিসেবে পরিশোধযোগ্য রাজস্বের ওপর উেস মূল্য সংযোজন কর কর্তন ও আদায় বিধিমালা, ২০২০-এর বিধি ৩-এর উপ-বিধি (৫) অনুযায়ী বিটিআরসি কর্তৃক ১৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর উেস আদায়ের বাধ্যবাধকতা রয়েছে ও এক্ষেত্রে দ্বৈত মূল্য সংযোজন কর আরোপিত হয়ে যায়। তাই এক্ষেত্রে দ্বৈত মূল্য সংযোজন কর পরিহার করার লক্ষ্যে এনবিআর মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২-এর ধারা ১২৬-এর উপ-ধারা (৩)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বিটিআরসিকে টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্স ব্যবহারের শর্ত অনুযায়ী রেভিনিউ শেয়ারিং হিসেবে সেলফোন অপারেটর কর্তৃক প্রদেয় রাজস্ব থেকে উেস মূল্য সংযোজন কর কর্তন বা আদায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে এ আদেশ কার্যকর বলে ধরা হবে।
এ বিষয়ে সেলফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম ফরহাদ (অব.) বলেন, বিটিআরসিতে সেলফোন অপারেটরদের রাজস্ব প্রদানের ওপর যে মূল্য সংযোজন কর বিদ্যমান ছিল, তা তুলে নেয়ার জন্য কর নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনবিআরকে ধন্যবাদ জানাই। এটি ছিল দ্বৈত কর, যা আইনবিরুদ্ধ। তবে আদেশটি কেবল টুজি ও থ্রিজির জন্য প্রযোজ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও তা ফোরজি বা পরবর্তী সময়ে আসবে এমন যেকোনো সেবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়া উচিত। এনবিআর আদেশটি পুনর্বিবেচনা ও তা সংশোধন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
খাতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বছরে সেলফোন অপারেটরদের আয় প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার মতো। সরকারের সঙ্গে রেভিনিউ শেয়ার বাবদ এ আয়ের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রদান করতে হয় অপারেটরদের। এছাড়া আয় থেকে আরো ১ শতাংশ দিতে হয় সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে। সব মিলিয়ে আয়ের সাড়ে ৬ শতাংশ সরকারকে দিতে হয় সেলফোন অপারেটরদের। এ হিসেবে রেভিনিউ শেয়ার বাবদ পাওয়া অর্থের ওপর মূসক হিসেবে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হতো তাদের।