১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত বিএসইসির

বস্ত্র খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি রিং শাইন টেক্সটাইলস লিমিটেডের বিরুদ্ধে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অর্থ জমা না দিয়েই প্রাইভেট প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ২৭৫ কোটি টাকার সংঘবদ্ধ আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ১৩ ব্যক্তিকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৯৬১তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
রিং শাইন টেক্সটাইলস প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের ২৭ কোটি ৫১ লাখ ৪ হাজার ৮২০টি শেয়ার ইস্যু করে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ২৭৫ কোটি ১০ লাখ টাকা মূলধন বৃদ্ধি করে। এতে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৯ কোটি ৯৫ লাখ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ২৮৫ কোটি ৫ লাখ টাকায়। তবে তদন্তে উঠে আসে, এসব শেয়ারের বিপরীতে প্রকৃত অর্থ জমা হয়নি। বরং অর্থ জমা না দিয়েই প্লেসমেন্টের মাধ্যমে শেয়ার বরাদ্দ নেয়া হয়।
জালিয়াতিতে রিং শাইনের উদ্যোক্তা, তৎকালীন পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নির্বাহী পরিচালক, সিএফও, কোম্পানি সচিবসহ বহিরাগত অনেকেই জড়িত ছিলেন। অনিয়মের মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত আব্দুল কাদের ফারুক ও তার সহযোগী ভারতীয় নাগরিক অশোক কুমার চিরিমারসহ সংশ্লিষ্ট ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদকে অভিযোগ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
অন্যদিকে ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড ও সিএপিএম অ্যাডভাইজরি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের (সিইও) পাঁচ বছরের জন্য পুঁজিবাজারে নিষিদ্ধ করেছে বিএসইসি। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান দুটির সনদ বাতিলের প্রক্রিয়াও শুরু করেছে কমিশন।
২০১৫ থেকে ২০২০ হিসাব বছরের ভুয়া আর্থিক বিবরণী প্রত্যয়ন করায় রিং শাইনের নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান আহমেদ অ্যান্ড আখতার, সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কো., মাহফেল হক অ্যান্ড কো. ও এটিএ খান অ্যান্ড কো. এবং তাদের অংশীদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (এফআরসি) অভিযোগ পাঠানো হয়েছে। এছাড়া যেসব বহিরাগত প্লেসমেন্টহোল্ডার আংশিক বা পুরো অর্থ জমা না দিয়ে শেয়ার গ্রহণ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও দুদকে অভিযোগ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কমিশন সভায় প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ও এর সহযোগী দুই কোম্পানি পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও প্রাইম ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের বিরুদ্ধে ২৯৬ কোটি টাকার মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে কোম্পানিগুলোর তৎকালীন পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুদকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।