শিরোনাম

South east bank ad

১৫ আগস্টের প্রথম শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল

 প্রকাশ: ০১ অগাস্ট ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   বিশেষ সংবাদ

১৫ আগস্টের প্রথম শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নারকীয় হত্যাযজ্ঞের প্রধান লক্ষ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেও এদিন প্রথম শহিদ হন তার বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল। মেজর বজলুল হুদা স্টেনগান দিয়ে শেখ কামালকে গুলি করে হত্যা করে।

আদালতে দেওয়া বঙ্গবন্ধু বাড়ির অন্যতম পাহারাদার হাবিলদার কুদ্দুস সিকদারের সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে, মেজর বজলুল হুদা ও ক্যাপ্টেন নূর চৌধুরীসহ কয়েকজন বাড়িতে প্রথম ঢোকে। প্রথমেই তারা শেখ কামালকে দেখতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে বজলুল হুদা স্টেনগান দিয়ে তাকে গুলি করে। শেখ কামাল বারান্দা থেকে ছিটকে গিয়ে অভ্যর্থনা কক্ষে পড়ে যান। সেখানে তাকে আবার গুলি করে হত্যা করা হয়।

বঙ্গবন্ধু ভবনের আবাসিক ব্যক্তিগত সহকারী এবং হত্যা মামলার বাদী মহিতুল ইসলামের প্রত্যক্ষ সাক্ষ্যেও একই বর্ণনা রয়েছে।

তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল শফিউল্লাহকে বাড়ি আক্রমণের পর বঙ্গবন্ধু টেলিফোনে যা বলেছিলেন তাতেও এর সত্যতা পাওয়া যায়। ১৯৮৭ এবং ১৯৯৩ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে দুটি সাক্ষাৎকারে শফিউল্লাহ বলেছেন, বাড়ি আক্রমণের পর বঙ্গবন্ধু জলদি ফোর্স পাঠানোর জন্য তাগিদ দিয়ে তাকে ফোন করেছিলেন। ফোনে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘শফিউল্লাহ তোমার ফোর্স আমার বাড়ি অ্যাটাক করেছে। কামালকে বোধ হয় মাইরা ফেলছে। তুমি জলদি ফোর্স পাঠাও।’

প্রবাসী লেখক ও গবেষক গোলাম মুরশিদ ‘মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর’ গ্রন্থে এ বিষয়ে বিষদ বিবরণ দিয়েছেন। শেখ কামাল নিহত হওয়ার পর মহিউদ্দিন ও তার সঙ্গীরা বাড়ির ভেতরে ঢুকে শেখ মুজিবকে খুঁজতে থাকে। শেষে তাঁর দেখা পায় সামনের বারান্দায়। সাহসের প্রতিমূর্তি মুজিব দাঁড়িয়ে আছেন প্রশান্তভাবে-হাতে পাইপ।

তাঁকে দেখে খুনী মহিউদ্দিন পর্যন্ত ভড়কে যায়। বঙ্গবন্ধুকে গুলি করতে পারেনি। কেবল বলে, ‘স্যার, আপনে আসেন’। শেষে যখন তাঁকে ধরে সিঁড়ি দিয়ে নামাতে আরম্ভ করে তখন বঙ্গবন্ধু চিৎকার করে বলেন, ‘তোরা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?’ এ সময় মহিউদ্দিনকে এক পাশে সরতে বলে হুদা আর নূর স্টেনগান থেকে গুলি বর্ষণ করে বঙ্গবন্ধুর ওপর।

ভোর ৫টা ৪০-এ মুখ থুবড়ে বঙ্গবন্ধু লুটিয়ে পড়েন সিঁড়িতে। তখনো তাঁর ডান হাতে ধরা পাইপ। কয়েকটা গুলি তাঁর বুকের ডান দিকে এবং পেটে লেগেছিল। যখন সূর্য ওঠার কথা, সেই সময় বঙ্গের গৌরব-রবি গেল অস্তাচলে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরও ঘাতকদের মিশন শেষ হয়নি। মহিউদ্দিন, হুদা ও নূর বাড়ির বাইরে চলে যাওয়ার পর ল্যান্সার আর আর্টিলারি সেনাদের নিয়ে আসে আজিজ পাশা আর মুসলেম উদ্দীন। পাশা তার সঙ্গীদের নিয়ে দোতলায় শোয়ার ঘরে গিয়ে বেগম মুজিব, শেখ জামাল এবং কামাল ও জামালের সদ্য বিবাহিত স্ত্রীদের স্টেনগানের গুলি দিয়ে হত্যা করে।

আগে থেকেই সেখানে ছিল সুবেদার ওয়াহাব জোয়ারদার। শেখ রাসেল, শেখ নাসের ও বাড়ির এক ভৃত্যকে নিচে নিয়ে যায় তারা। ঘাতকরা রাসেলকে প্রথমে বসিয়ে রেখেছিল গেটের পাশে পাহারাদারের চৌকিতে। রাসেল তখন মায়ের কাছে যাবে বলে কাঁদছিল। পাশা একজন হাবিলদারকে তখন হুকুম দেয় রাসেলকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যেতে। সেই হাবিলদার তাকে দোতলায় মায়ের লাশের কাছে নিয়ে প্যেন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করে।

BBS cable ad

বিশেষ সংবাদ এর আরও খবর: