র্যাব-৪ এর অভিযানে “আনসার আল-ইসলাম” এর ০৬ সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার
এলিট ফোর্স র্যাব তার সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ এর বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর কর্মপরিকল্পনা ও অপতৎপরতা বৃদ্ধিতে র্যাব তার গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রেখেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখ সন্ধ্যা ১৮.০০ ঘটিকা হতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ভোর ০৫.০০ ঘটিকা পর্যন্ত র্যাব-৪ এর পৃথক তিনটি আভিযানিক দল ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহীতে অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর নিম্নোক্ত ০৬ সক্রিয় সদস্য’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
(১) মোঃ শাকিল ইসলাম(১৯), জেলা- লালমনিরহাট
(২) মোঃ আশিকুর রহমান (১৮), জেলা- কুমিল্লা
(৩) আবু মোঃ ওবায়দুল্লাহ (১৭), জেলা- কিশোরগঞ্জ
(৪) মোঃ তৌকির হোসেন (১৪), জেলা- ময়মনসিংহ
(৫) আরাফাত হোসেন নাঈম (১৯), জেলা- সিরাজগঞ্জ
(৬) আফসানুর রহমান রুবেল (৩১), জেলা- রাজশাহী।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘আনসার আল-ইসলাম’ এর সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করে এবং তাদের নিকট থেকে “আনসার আল-ইসলাম” এর বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদী বই, লিফলেটসহ ব্যাগ ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
১। অভিযুক্ত মোঃ শাকিল ইসলাম (১৯)'কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে পেশায় একটি দোকানের সেলস্ম্যান এবং সে কিছুদিন যাবৎ “আনসার আল ইসলাম” এর সক্রিয় সদস্য হিসেবে সে ও তার সহযোগীরা গোপনে অন্যদের উদ্ধুদ্ধকরণের জন্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো। সে আনসার আল ইসলাম এর সামরিক শাখার একজন সদস্য বলে জানিয়েছে। তার কাছ থেকে বোমা তৈরীর ম্যানুয়াল পাওয়া গেছে।
২। মোঃ আশিকুর রহমান (১৮)'কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে একটি দোকানের সেলস্ম্যান হিসাবে কাজ করে এবং কয়েক বছর যাবৎ “আনসার আল ইসলাম” এর সক্রিয় সদস্য হিসেবে “আনসার আল ইসলাম” এর সাথে জড়িত থেকে অন্যান্যদের সাথে গোপন বৈঠকের পাশাপাশি চাঁদা ও নতুন সদস্য সংগ্রহ করে আসছিলো। সে ‘আনসার আল ইসলাম’ এর সামরিক শাখার সদস্য। তার কাছ থেকে বোমা তৈরীর ম্যানুয়াল পাওয়া গেছে। বোমা তৈরীর কাঁচামাল ক্রয় করতে যাওয়ার প্রস্তুতির সময় শাকিল ও আশিককে রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
৩। আবু মোঃ ওবায়দুল্লাহ (১৭)'কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে একজন কলেজ ছাত্র। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় সে “আনসার আল ইসলাম” এর সাথে জড়িত থেকে অন্যান্যদের সাথে গোপন বৈঠকের পাশাপাশি বন্ধুত্ব তৈরী করে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে আসছিলো। তার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন উগ্রবাদী পোস্ট, ভিডিও আপলোড এর প্রমাণ পাওয়া যায়। তাকে নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
৪। মোঃ তৌকির হোসেন (১৬)'কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে স্থানীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র এবং সে বেশ কিছু দিন যাবৎ “আনসার আল-ইসলাম” এর সাথে জড়িত থেকে বেনামে এ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময় উগ্রবাদী পোস্ট লেখা ও ভিডিও আপলোড করে উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো। এছাড়াও সে বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন উগ্রবাদী লেখালেখি, ভিডিও এবং লিফলেট প্রচার করে আসছিলো। তাকে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানাধীন এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
৫। আরাফাত হোসেন নাঈম (১৯)'কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে স্থানীয় একটি কলেজের ছাত্র এবং “আনসার আল ইসলাম” এর সক্রিয় সদস্য হিসেবে সে ও তার সহযোগীরা গোপনে অন্যদের উদ্ধুদ্ধকরণের জন্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো। তাকে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানাধীন এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
৬। আফসানুর রহমান রুবেল (৩১)'কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি এবং বেশ কিছুদিন যাবৎ “আনসার আল-ইসলাম” এর সাথে জড়িত থাকার পাশাপাশি নতুন নতুন সদস্য সংগ্রহ করে আসছিলো। তাকে রাজশাহী জেলার চন্দ্রিমা থানাধীন এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন এবং তাদের অন্যান্য সহোযোগীদের গ্রেফতারে র্যাব এর গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
