শিরোনাম

South east bank ad

চাঞ্চল্যকর সাগর (১৮) হত্যা মামলার প্রধান ০৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১

 প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২০, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   র‍্যাব

গত ১৬ অক্টোবর ২০২০ তারিখ আনুমানিক ১৮৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিম মোঃ সাগর মিয়া (১৮), পিতা- মৃত ইদ্রিস আলী, সাং- চরনীখলা, থানা- ইশ্বর, জেলা- ময়মনসিংহ, বর্তমান ঠিকানাঃ সাং-বাহাদুরপুর (বিলস্নাল হোসেন এর বাড়ির ভাড়াটিয়া), থানা- সদর, জিএমপি, গাজীপুর নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর ভিকটিমের পরিবার অনেক খোঁজাখুজির পর ভিকটিমকে না পেয়ে এই সংক্রানেত্ম গাজীপুর মহানগরীর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে, যার নম্বর-১৭০১ তারিখ ২৯/১০/২০২০ ইং। নিখোঁজ ভিকটিম মোঃ সাগর (১৮) আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স হিসেবেও কাজ করত বলে জানা যায়।
গত ১৯ অক্টোবর ২০২০ তারিখ আনুমানিক ১৪০০ ঘটিকার সময় গাজীপুর মহানগরীর ন্যাশনাল পার্কের নান্দুয়াইন চাতুরাপাড়া সাকিনস্থ নাফিজ গার্ডেনের পশ্চিম পাশের দেওয়াল সংলগ্ন জনৈক খায়রম্নল মিয়ার ধান ক্ষেত হতে পুলিশ একটি অজ্ঞাত যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার হয়। তদপ্রেক্ষিতে পুলিশ বাদী হয়ে গাজীপুর মেট্টোঃ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-২৮, তারিখ ১৯-১০-২০ ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দঃ বিঃ। পরবর্তীতে গত ০৫ নভেম্বর ২০২০ ইং তারিখ ভিকটিম সাগর এর পরিবারের লোকজন উদ্ধারকৃত লাশের গায়ে থাকা পোষাক, বেল্ট ও পায়ের স্যান্ডেলের ছবি দেখে সেটি নিখোঁজ সাগরের লাশ বলে সনাক্ত করে।
এই নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনাটি সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরম্নত্বের সাথে প্রচারিত হয়। তদপ্রেক্ষিতে র‍্যাব-১ হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দ্রম্নত আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ০৬ নভেম্বর ২০২০ইং তারিখ আনুমানিক ০১৩০ ঘটিকায় র‍্যাব-১ এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বর্ণিত হত্যা মামলার প্রধান আসামী ১) মোঃ লিটন (২৩), পিতা- মোঃ আবুল হাসেম, মাতা- মোসাঃ লায়লী বেগম, সাং- বাহাদুরপুর, ২) মোঃ শাহীন (২২), পিতা- মোঃ জহিরম্নল ইসলাম, মাতা- মোসাঃ সাজেদা খাতুন, সাং- ভাওরাইদ দক্ষিণপাড়া, ৩) মোঃ শরীফুল ইসলাম (৩৮), পিতা- মোঃ আব্দুল আলী, মাতা- মোসাঃ রহিমা খাতুন, সাং- বাহাদুরপুর ও ৪) মোঃ আরমান (১৯), পিতা- মোঃ আমিরম্নল, মাতা- সমেলা খাতুন, সাং- বাহাদুরপুর, সর্ব থানা-সদর, জিএমপি, গাজীপুর’দেরকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীরা বর্ণিত হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, তারা সকলে এলাকার চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী/সন্ত্রাসী। ইতিপূর্বে মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অপরাধে তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে তারা জেলে যায়। তাদের আটকের পিছনে সোর্স সাগরের ভূমিকা রয়েছে বলে তারা জানতে পারে। জেলে বসে তারা পরিকল্পনা করে বাইরে বের হয়েই তাদের পথের কাঁটা সাগরকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিবে। ঘটনার আনুমানিক এক মাস আগে তারা জেল থেকে জামিনে মুক্তি পায় এবং সোর্স সাগরের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পূর্ব পরিকল্পনা মতে গাজীপুর মহানগরীর ভীমবাজার এলাকায় ভিকটিম সাগরসহ ধৃত ও পলাতক আসামীরা সকলে একসাথে চোলাইমদ পান করে। আনুমানিক ১৯১৫ ঘটিকার সময় তারা ভিকটিমকে ইয়াবা দেওয়ার কথা বলে আসামী লিটন ও শাহীন মোটরসাইকেলে করে ভিকটিমকে ন্যাশনাল পার্কের গহীন বনের মধ্যে নিয়ে যায়। এসময় ধৃত আসামী শরীফুল ও আরমান দুইজনে রাসত্মায় পাহারার দায়িত্বে থাকে এবং পলাতক আসামী আমিরম্নল পূর্ব থেকেই বনের মধ্যে ঘটনাস্থলে চাকু এবং লাঠি নিয়ে অবস্থান করেছিল। ধৃত আসামী লিটন ও শাহীন ভিকটিম সাগরকে নিয়ে বনের ভিতর পৌছালে তারা তিনজনে মিলে ভিকটিম সাগরকে লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে এবং গামছা দিয়ে সাগরের গলা গাছের সাথে বেঁধে হাত-পা চেপে ধরে ধারালো চাকু দিয়ে ভিকটিমের গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারী ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরে হত্যাকারীরা লাশ কাঁধে নিয়ে ঘটনাস্থল হতে অনুমান ২০০ মিটার দূরে একটি ধান ক্ষেতে ফেলে দেয়। এসময় হত্যাকারীরা ভিকটিমের মুখ এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেয় যাতে করে কেউ লাশ সনাক্ত করতে না পারে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ঠান্ডা মাথায় হত্যাকান্ড সংঘটনের পরা ধৃত আসামী নিজ নিজ বাসায় চলে যায় এবং আটক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিল বলে জানায়।

BBS cable ad

র‍্যাব এর আরও খবর: