প্রসূতি মায়ের পাশে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান : মেটালেন হাসপাতালে যাবতীয় বিল
সাতক্ষীরার কাটিয়া মাঠপাড়া সন্তান সম্ভবা মা রোকিয়া বেগম। সুপার সাইক্লোন আম্ফান এর রাতে তীব্র ব্যাথা নিয়ে সাতক্ষীরা শহরে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। অতি দরিদ্র পরিবারে লড়াই সংগ্রামে জীবন চলা। চরম অসহায় অবস্থায় পাষণ্ড স্বামী তাকে ছেড়ে যায় কিছুদিন আগে। নতুন করে সংসার পাতে অমানুষ নিষ্ঠুর স্বামী। প্রতিবেশি একজনের দেয়া মাত্র ৬০০ টাকা জমা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন রোকেয়া। হাসপাতালে তার কোল আলো করে জন্ম নেয় এক ফুটফুটে কণ্যা সন্তান। কিন্তু রোকেয়ার মুখে হাসি নেই, রাজ্যর দুঃচিন্তা তার মাথায়। হাসপাতালের ২৬ হাজার টাকা বিল দিবে কোথা থেকে। এলাকার কয়েকজন চাঁদা তুলে সামান্য কিছু যোগাড় করেছে। বাকী টাকার জন্য এদিক সেদিক ঘুরে কোন লাভ হয়নি। কারো একজনের পরামর্শে একজন সাহায্যকারী জেলা পুলিশ সুপারকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানালো।
বিস্তারিত শুনে জেলা গোয়েন্দা ইন্সপেক্টরকে ঘটনার বিস্তারিত খোঁজ নিতে বললেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান । খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে একটা টিম পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতার ব্যবস্থা করলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে কিছু বিল কমিয়ে ১৯ হাজার করে পুরোপুরি পরিশোধ করার ব্যবস্থা করলেন।
জেলা পুলিশের এম্বুলেন্স এর মাধ্যমে ওই অসহায় মাকে তার বাড়িতে পৌছে দিতে নির্দেশ দিলেন জেলা পুলিশ সুপার। পরে আজকে ডিবির ওসির মাধ্যমে কিছু টাকা দিয়ে বাচ্চার জন্য জামা কাপড়, কিছু ফলমূল কিনে বাসায় পাঠানো হয়। এম্বুলেন্স, পোশাক সামগ্রী, ফলমুল নিয়ে অসহায় মাকে তার বাড়িতে নিরাপদে পৌঁছে দিতে পারা ঈদের আগে জেলা পুলিশের জন্য একটা পরিতৃপ্তি।
এব্যাপারে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, টিম সাতক্ষীরার গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ সহ তার টিমের সবাইকে ধন্যবাদ। পাশাপাশি যারা যোগাযোগ করে এমন মহৎ কাজে পাশে থাকার সুযোগ দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। করোনা দূর্যোগ আর সুপার সাইক্লোন আম্ফান সময় একজন অসহায় মায়ের সেবায় নিয়োজিত থাকতে পেরে জেলা পুলিশ সাতক্ষীরা আনন্দিত। পবিত্র ঈদ আমাদের এমন ত্যাগের শিক্ষাই দেয়। সন্ত্রাস মুক্ত মানবিক সাতক্ষীরা গড়া ই আমাদের প্রত্যাশা।

