পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর নিহত : তদন্তের বিষয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি
কক্সবাজারের মেরিনড্রাইভের চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত টিম টেকনাফ সফর করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) টেকনাফ থানায় তিন ঘণ্টা অবস্থান করে মামলার আলামত ও কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সাথে কথা বলেছেন তদন্ত টিমের প্রতিনিধিরা। এর আগে সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনাস্থলটিও পরিদর্শন করেন। এরপর টেকনাফ থেকে চট্টগ্রামে ফিরে যান তদন্ত টিম।
তবে তাদের তদন্তের বিষয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে, তদন্ত টিম আসার খবর পেয়ে টেকনাফ থানার সামনে ভিড় জমান এলাকার কিছু ক্ষুব্ধ ব্যক্তি। এ ঘটনা ছাড়াও ওসি প্রদীপ ও তার সহযোগী টেকনাফ থানার বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে আসেন ভুক্তভুগীরা। তবে তদন্ত টিম তাদের কথা শোনেননি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত টিমের প্রতিনিধিদের প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর টেকনাফ থানায় পৌঁছান তারা। বিকাল ৫ টায় তারা থানা থেকে বেরিয়ে যান।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি এবিএমএস দোহা বলেন, থানায় তদন্ত প্রতিনিধি টিম মামলার আলামত দেখেছেন এবং তিন ঘণ্টা বৈঠক করে চলে যান। তবে সেখানে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সে সম্পর্কে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
টেকনাফ বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে মেরিন ড্রাইভে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার স্থানটি ঘুরে দেখেন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি টিম।
তবে এসময় তারা সেখানে কারও সঙ্গে কথা বলেননি। এরপর টেকনাফ থানার দিকে যান তারা।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকার চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
এ ঘটনায় বুধবার (৫ আগস্ট) সকালে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের ৯ সদস্যের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের আদালতে মামলা করেন সিনহা রাশেদের বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।
মামলা হওয়ার পর টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশকে প্রত্যাহার করা হয়। তার পরিবর্তে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা এবিএমএস দোহাকে। এরপর আদালতের নির্দেশে বুধবার রাতেই মামলাটি টেকনাফ থানায় নথিভুক্ত হয়। যার মামলার নম্বর ৯৪/২০২০ইং।
এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট টেকনাফ আদালতের বিচারক মো. হেলাল উদ্দীনের আদালতে হাজির হলে টেকনাফ থানা থেকে সদ্য প্রত্যাহার হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ ৭ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।