কর্মহীনদের বাসায় গিয়ে খাদ্য পৌঁছে দিচ্ছেন মতিঝিলের এডিসি এনামুল হক মিঠু
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রামণ রোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে নিজ ঘরে অবস্থান করছেন দেশের মানুষ। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। এর ফলে খাদ্য সংকটও দেখা দিয়েছে তাদের। এ অবস্থায় সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে দুস্থ ও অসহায় পরিবারের সদস্যদের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দুর্যোগের এই সময় বেশি বিপদে পড়েন সমাজের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী। লোকলজ্জার ভয়ে তাঁরা সাহায্যের জন্য ত্রাণের লাইনেও দাঁড়াতে পারেন না, আবার অন্যের কাছে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে পারেন না।
কর্মহীন এসব মানুষের মধ্যে ব্যক্তি উদ্যোগে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশর (ডিএমপি) মতিঝিল জোনের এডিসি এনামুল হক মিঠু। করোনা সংকটে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও অসচ্ছল মানুষ ফোন পেয়ে তিনি নিজেই বাসায় বাসায় গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। নিজস্ব অর্থায়নে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন ৩০তম বিসিএস ক্যাডারের এই পুলিশ কর্মকর্তা। সাতক্ষীরার এই কৃতি সন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষে মানবতার সেবায় পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে সাধারণ মানুষের মধ্যে তাঁর সুখ্যাতি রয়েছে।
মতিঝিল জোনের এডিসি এনামুল হক মিঠু বলেন, কোন কিছুর প্রাপ্তির আশায় নয়, শুধু মানুষের অসহায়ত্বের দিক বিবেচনা করেই মানবিক দ্বায়িত্ববোধ থেকে এ উদ্যোগ নিয়েছেন। করোনাভাইরাসের শুরুর দিকে মতিঝিল,কমলাপুর.স্টেডিয়ামসহ বিভিন্ন স্থানে দেখতে পান ছিন্নমূল এবং হতদরিদ্র মানুষের একাধিকবার ত্রাণ পেয়েছেন। কিন্তু নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ মানবেতরভাবে জীবনযাপন করলেও লোকলজ্জার ভয়ে সাহায্য নিতে আসছেন। এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমি নিজেও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাই তাদের কষ্ট অনুভব করতে পারি। প্রথমদিকে এসব পরিবারের সদস্যদের ত্রাণ সহায়তা নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু তারা ইতস্তবোধ করেন। পরে বাসায় বাসায় গিয়ে তাদের খাবার পৌছে দেই।
এডিসি এনামুল হক মিঠু বলেন, রাজধানীর মৌচাক,আনারকলি মার্কেটসহ বিভিন্ন দোকানের কর্মচারী করোনা প্রার্দুভাবে বেকার হয়ে পড়েছেন। এছাড়া যানবাহন চালকরাও বেকার হয়ে পড়েছেন। তাদের বাসায় বাসায় গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিচ্ছি। আজও গুলবাগ এলাকার ১০টি পরিবারের খাবার পৌছে দেন তিনি। এছাড়া গত ১০ মে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশের ৩৪০ সদস্যকে তিনি মৌসুমি ফল পৌছে দেন। এই হাসপাতালে ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসাধীন আছেন।
ব্যক্তিগত উদ্যোগের পাশপাশি গত শুক্রবার ডিএমপির দেয়া ৫০০ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী কর্মহীন মানুষদের বাসায় গিয়ে পৌছে দেন তিনি।
পুলিশের এই এডিসি বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রামণ রোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে নিজ ঘরে অবস্থান করছেন এসব মানুষ। তাই সম্পূর্ণ ব্যক্তিগতভাবে এসব অসহায় মানুষগুলোর পাশে থাকার চেষ্টা করছি। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সাহায্য করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।