মানুষের জীবন ও জীবিকা এগিয়ে নিচ্ছে সরকার: শিল্পমন্ত্রী

ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে তৃণমূল গণমানুষের কাছে পৌঁছানোর কারণে সরকারের ওপর মানুষের নতুন করে আস্থা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, ডিজিটাল ডিভাইসের ফলে করোনা মহামারীকে সাহসিকতার সঙ্গে উত্তরণ ঘটানোর পাশাপাশি মানুষের জীবন ও জীবিকা দুটোকে নিয়েই সমান তালে সামনে এগিয়ে চলছে সরকার। করোনায় বিশ্ব যখন দিশেহারা, তখন প্রধানমন্ত্রীর ওপর নতুন করে তৃণমূলের গণমানুষের আস্থা তৈরি হলো। গতকাল ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো-২০২১-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন শিল্পমন্ত্রী।
১ এপ্রিল শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এক্সপোর সমাপনী অনুষ্ঠান রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। যৌথভাবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ), আইডিয়া প্রকল্প, এটুআই, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)। সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ এমপি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্ব নতুন প্রজন্মের তরুণ ইনোভেশনকারীদের নিয়ে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যাত্রা করেছে, অল্প সময়ের মধ্যে এর একটি প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা হয়ে গেল। সে পরীক্ষায় আমরা পাস করেছি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও সাহসী নেতৃত্বে কভিডকালে ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে তৃণমূলে গণমানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, করোনা মহামারীর সমাপ্তি দেখতে আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। এ করোনার পাশাপাশি আবার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উষালগ্নে দাঁড়িয়ে আছে পুরো বিশ্ব। এমন একটি সময়ে ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো-২০২১ আয়োজন করে আমরা নিজেদের উদ্দেশ্যই জানান দিতে চেয়েছি। করোনা মহামারী মোকাবেলায় আমরা যেভাবে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেছি, ফিজিক্যালি ডিসটেন্সড থেকেও ভার্চুয়ালি কানেক্টেড থেকেছি, তেমনি করোনা-পরবর্তী বিশ্বেও আমরা এগিয়ে যেতে চাই তথ্যপ্রযুক্তির শক্তি কাজে লাগিয়েই।
তিনি আরো বলেন, দেশের গবেষণা কেন্দ্রগুলোতে অ্যাডভান্সড ম্যাটেরিয়ালস, ক্লাউড টেকনোলজি, অটোনমাস ভেহিকল, সিনথেটিক বায়োলজি, ভার্চুয়াল অগমেন্টেড রিয়েলিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবট, ব্লক চেইন, থ্রিডি প্রিন্টিং ও ইন্টারনেট অব থিংকস বিষয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গবেষণা পরিচালনা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়কে সঙ্গে নিয়ে এ ধরনের গবেষণায় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়ার পরিকল্পনাও করা হয়েছে। উদ্ভাবিত পণ্যগুলোর মেধাস্বত্ব নিশ্চিতে আইসিটি সেক্টর সহায়ক প্যাটেন্ট, কপিরাইট এবং ডিজাইন অ্যাক্ট করার জন্য তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা কামনা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ এমপি বলেন, করোনা মহামারীর সময়ও টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত রাখা; শিক্ষার্থীদের ঘরে বসেই শিক্ষা দেয়া; সামাজিক নিরাপত্তার অংশ হিসেবে দুস্থদের অর্থসহায়তা দেয়া; এ সবকিছুই সম্ভব করা হয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ফলে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের সাফল্যের কথা বলতে পারি। বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবা ছড়িয়ে দেয়ায় ঈর্ষণীয় সাফল্যই অর্জন করেছি।
সমাপনী অনুষ্ঠানে এবারের এক্সপো আয়োজনে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম এনডিসি বলেন, তরুণদের আইসিটিতে দক্ষতা বাড়াতে দেশের ৬৪টি জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হবে। সবগুলো হাই-টেক পার্ক চালু হয়ে গেলে জেলা-উপজেলা এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষরাও প্রযুক্তির সুফল পাবে। আমরা তরুণ উদ্যোক্তাদের তথা স্টার্টআপদের জন্য প্রতিটি পার্কের একটি ফ্লোর বিনা ভাড়ায় বরাদ্দ দেয়ার ব্যবস্থা রাখছি। এর মাধ্যমে আমাদের স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।