একজন রোগী দেড়জনকে সংক্রমিত করছেন
দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত একজন রোগী গড়ে এক দশমিক শূন্য পাঁচ জনের (১.০৫) মধ্যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ খবর দিয়েছেন। ২৩ জুন তারা স্বাস্থ্য অধিদফতরকে এ তথ্য দেন।
‘বাংলাদেশে করোনা : ছয় মাসের পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক অনলাইন ভিত্তিক এক আলোচনায় এ তথ্য জানানো হয়। শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত এ আলোচনায় বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ও বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এমএ ফয়েজ, বিএমএর সাবেক সভাপতি এবং বিসিপিএসের সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই-মাহবুব, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ও জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোসতাক হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনা সংক্রমণ লেখচিত্রের পিক (সর্বোচ্চ সংক্রমণ) কাছাকাছি পর্যায়ে রয়েছে। আগামী কুরবানি ঈদের সময় যদি মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তবে সংক্রমণ আরো বাড়বে।
একজন করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী মহামারীর মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সময়ে গড়ে কতজনের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঘটাচ্ছেন, সেই ধারণা পাওয়া যায় যে সংখ্যার মাধ্যমে, সেটিকে ‘আর নট’ হিসেবে প্রকাশ করা হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে ‘আর নট’-এর গড় মান ২ থেকে ২ দশমিক ৫- অর্থাৎ প্রত্যেক কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি গড়ে দু’জনের বেশি মানুষের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটাচ্ছেন। তবে বিভিন্ন দেশ এবং ভৌগোলিক অঞ্চল ভেদে এ আর নটের মান পরিবর্তিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বর্তমানে গড়ে একজন করোনা রোগী দেড়জন মানুষকে সংক্রমিত করছেন।
বক্তারা করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন অধিদফতরগুলোতে নেতৃত্ব ও সমন্বয়ের ঘাটতির কথা উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সরকারের পরিকল্পনার ঘাটতি, দক্ষ জনবল ও অবকাঠামোর অভাব, দেশি বিশেষজ্ঞদের ঠিকভাবে কাজে লাগাতে না পারাসহ বিভিন্ন দুর্বলতার কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অভ্যাসও কম বলে উল্লেখ করেন তারা।