করোনা ও চীনের লাভ-ক্ষতি

(এহছান খান পাঠান):
গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে উৎপত্তি হয় করোনা ভাইরাসের। এরপর চীনে বাড়তে থাকে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এরপর অবরুদ্ধ করে দেয়া হয় করোনা ভাইরাসে উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশসহ চীনের বিভিন্ন শহর। চীনে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার৮১৩জন। এছাড়া চীনে করোনায় মারা গেছেন ৩ হাজার১৭৬জন। এছাড়া দেশটিতে সুস্থ হয়েছেন প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষনা করেছে ইতিমধ্যে। আতঙ্কিত সারাবিশ্ব।
অন্যদিকে করোনা ভাইরাস জয়ের আভাস ইতিমধ্যে দিয়ে রেখেছে চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন। এ নিয়ে চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশটিতে করোনা ভাইরাসের মহামারী কেটে গেছে।
করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে পুরো বিশ্বের চোখের সামনে চীন দুর্দান্ত একটি অর্থনৈতিক খেলা খেলেছে। পশ্চিমা দেশগুলোর অন্তর্ভুক্ত কোম্পানিগুলোর ২০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমানের প্রায় ৩০ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়েছে চীন। করোনা ভাইরাসের কারনে চীনের উহানের পরিস্থিতি খুবই খারাপ দিক চলে যায়। এ কারণে, চীনা মুদ্রার মান হ্রাস পেতে শুরু করে। কিন্তু চীনা সেন্ট্রাল ব্যাংক এই পতন রোধ করতে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং রাসায়নিক শিল্পের শেয়ারের দাম ৮৮ শতাংশ হ্রাস পায়। এক পর্যায়ে বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো (ফিন্যান্সিয়াল শার্ক) সকল চীনা স্টক বিক্রি শুরু করে। কিন্তু কেউ এগুলো কিনতে চায়নি। সেগুলি পুরোপুরি অবমূল্যায়িত হয়ে যায়। যখন শেয়ারগুলোর দাম অনুমোদিত সীমা ছাড়িয়ে যায়, তিনি সে সময় একইসাথে সমস্ত ইউরোপীয় এবং আমেরিকানদের শেয়ার কেনার নির্দেশ দেন চীনা প্রেসিডেন্ট। কয়েক মিনিটের মধ্যে চীনারা তাদের বেশিরভাগ শেয়ার সংগ্রহ করে ফেলে। এর মাধ্যমে ইউরোপীয় এবং আমেরিকানদের দ্বারা নির্মিত সংস্থাগুলির সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার হয়ে যায় চীন। এই চীনা কম্পানিগুলো ভারী শিল্পের (হেভি ইনডাস্ট্রি) মালিক হয়ে উঠেছে যার ওপর ইইউ (ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন) আমেরিকা এবং পুরো বিশ্ব নির্ভরশীল।
হয়তো সবাই এখন হিসাব কষবে করোনা চীনের লাভ-ক্ষতি কতটুকু হল।
(এহছান খান পাঠান - বার্তা সম্পাদক, দৈনিক অর্থনীতির কাগজ)