শিরোনাম

South east bank ad

পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ডিএনডি’র পানি

 প্রকাশ: ২৬ অগাস্ট ২০১৭, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ডিএনডি’র পানি
ডিএনডি’র জলাবদ্ধতার পানি পচে গেছে। বিবর্ণ আকার ধারণ করা ওই পচা পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে ডিএনডিবাসীর দুর্ভোগ আরেক ধাপ বেড়েছে। গত তিন মাস ধরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার শিকার কয়েক লাখ ডিএনডিবাসী পানিবন্দি হয়ে আছে। শিল্প-কারখানা, ডাইং, পয়নিষ্কাশনের পানি জলাবদ্ধতার সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে মানুষ এই পানির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করছে। পায়ে ঘা হয়ে গেছে অনেকের। পায়ে ঘা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৃহস্পতিবার দুই ব্যক্তি অনশন কর্মসূচি পালন করেছে। অনেকে বাড়ি-ঘরে তালা দিয়ে বাঁধের ভেতর উঁচু ভবন ও বাঁধের বাইরে বিভিন্ন বাড়িতে ভাড়ায় আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাসায় উঠেছে। ঈদ ঘনিয়ে আসায় পানিবন্দি মানুষের মধ্যে উৎকন্ঠা বেড়ে গেছে।  কোরবানি দেয়া থেকে বঞ্চিত হবে অনেকে। কারণ কোরবানির পশু জবাই করার জায়গাও পানিতে তলিয়ে আছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের দাবিতে মানববন্ধন, অনশন, সংবাদ সম্মেলন করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না ডিএনডিবাসী। কোন জনপ্রতিনিধি জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে ডিএনডিবাসীকে মুক্ত করতে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা তাদের এক নজর দেখতেও আসেনি। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী মানুষদের। তাদের অভিযোগ, উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পুরনো  ৪টি পাম্প ও ছোট ছোট আরো ৮/১০টি শ্যালোপাম্প দিয়ে ঢিমেতালে পানি নিষ্কাশন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তাও আবার অধিকাংশ সময় একাধিক পাম্প বিকল ও বন্ধ হয়ে থাকে । পাম্প হাউজের উদাসীনতা ও খামখেয়ালীপনার কারণে দুর্ভোগ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। সিদ্ধিরগঞ্জে পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, জলাবদ্ধতার পানি পঁচে চরম দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নিরুপায় হয়ে এই পানি দিয়ে যাতায়াত করছি। গত তিন মাস ধরে দুর্ভোগের মধ্যে আছি। ছোট দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বেশি চিন্তিত। ঘর থেকে বের হলেই ময়লা পানি। পানিবাহী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে পরিবারের সদস্যরা। কবে মুক্তি পাবো এই দুর্ভোগ থেকে আল্লাহ জানে। সিদ্ধিরগঞ্জ সচেতন নাগরিক কমিটির আহবায়ক কলামিস্ট এমএম মাসউদ (বাদল) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ তিন মাস ডিএনডির মানুষ পানিবন্দি হয়ে দর্ুভোগ পোহালেও কোন জনপ্রতিনিধি আমাদের দেখতে আসেনি। তারা ইচ্ছে করলে জরুরিভাবে কয়েকটি পাম্প বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে পারতো। কিন্তু তা করেনি। এটা এটা দুঃখজনক। ঈদের আগে পানি না শুকালে মানুষ এবার কোরবানিও দিতে পারবে না। সূত্রমতে, ৩২ দশমিক ৮ কিলোমিটার ডেমরা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধের  ভেতর প্রায় ২০ লাখ মানুষ বসবাস করে।  রোজার ঈদের আগে হালকা ও ভারী বর্ষণে এই বাঁধের ভেতর ব্যপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে কয়েক লাখ মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ে। শিমরাইল পাম্প হাউজের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ৪টি পাম্প দিয়ে ডিএনডির ভেতরে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলা হয়। ২০০৪ সালে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কারণে ২২টি শ্যালো পাম্প যুক্ত করা হয়। কিন্তু উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ৪টি পাম্পের মধ্যে কখনো একটি কখনো দুটি পাম্প বিকল হয়ে থাকে। আর ২২টি স্যালো পাম্পের মধ্যে ১৫টি সচল রয়েছে। তাছাড়া অর্ধ শতাব্দি বছরের পুরনো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ৪টি পাম্প আগের মতো পানি নিস্কাশন করতে পারছে না। সেকেন্ডে ১২৮ কিউসেক পানি নিষ্কাশনের কথা থাকলেও এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। পাম্প হাউজ কর্তৃপক্ষও স্বীকার করেছেন, পুরনো পাম্পগুলো দিয়ে আগের মত পানি নিস্কাশন হয় না। তবে তারা বলছেন, ডিএনডির জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানে একনেটের বৈঠকে ৫৫৮ কোটি টাকার যে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে এই সমস্যা আর থাকবে না। এদিকে ডিএনডি বাঁধের ভেতরে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল পাম্প হাউজের সামনে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর মানববন্ধন করেছে অনৈসলামি কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটি।
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: