শিরোনাম

South east bank ad

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তেল শোধনাগার নির্মাণ করবে বিপিসি

 প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০১৬, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তেল শোধনাগার নির্মাণ করবে বিপিসি

জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চট্টগ্রামের পর এবার দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তৃতীয় তেল শোধনাগার (রিফাইনারি) স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এ লক্ষ্যেপটুয়াখালীর পায়রা বন্দর এলাকায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) ১ হাজার একর জমি বরাদ্দ দিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। রিফাইনারির পাশাপাশিওই এলাকায় ২ লাখ মেট্রিক টন ক্ষমতার একটি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাস প্লান্টও নির্মাণ করা হবে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দশকে জ্বালানি তেলের বার্ষিক চাহিদা ১১ লাখ মেট্রিক টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৬৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। এপ্রবৃদ্ধি বিবেচনায় ২০২১ সাল নাগাদ চাহিদা ৮০ লাখ মেট্রিক টন এবং ২০৩০ সালে ১ কোটি মেট্রিক টনের বেশি হবে। কিন্তু চলমান ইস্টার্ন রিফাইনারির একমাত্র ইউনিটের সক্ষমতা বছরে মাত্র ১৫ লাখ মিটার মেট্রিক টন। বাকি ৫০ লাখ মিটার মেট্রিক টন আমদানি করতে হয়, যা অনেক ব্যয়বহুল।গত বছর প্রতিষ্ঠানটি ৫৩ লাখ ৯৩ হাজার টন পরিশোধিত ও অপরিশোধিত তেল আমদানি করে। এতে খরচ হয় ২৬ হাজার ৯৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টি ও করিডোর ভাগাভাগির ফলে দেশে যানবাহন চলাচল অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে জ্বালানিতেলের চাহিদাও বৃদ্ধি পাবে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। সক্ষমতা বাড়াতে ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণেরউদ্যোগ নেয়া হয়। এটি নির্মিত হলে দেশে তেল পরিশোধনের ক্ষমতা তিনগুণ বেড়ে বার্ষিক ৪৫ লাখ টনে দাঁড়াবে। ইআরএল দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনের পর বিপিসি বছরে মাত্র ১০ লাখটন জ্বালানি তেল আমদানি করবে। তবে ইস্টার্ন রিফাইনারির বিদ্যমান ইউনিট ও নির্মাণাধীন ইউনিট দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় অন্যান্য প্রান্তে জ্বালানি পরিবহন অনেক ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ। তাইদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে নির্মাণাধীন পায়রা বন্দর এলাকায় তেল শোধনাগার ও এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে জ্বালানি পরিবহনে ব্যয় সংকোচন ও সময়সাশ্রয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এসব অবকাঠামো বাস্তবায়নে পায়রা বন্দর এলাকায় বিপিসিকে ১ হাজার একর জয়গা বরাদ্দ দিয়েছে বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াশুরু হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার বলেন, পায়রা বন্দর ঘিরে জ্বালানি বিভাগের নানা পরিকল্পনা রয়েছে। তেল শোধনাগার,এলপিজি মজুদ ও বোতলজাত প্ল্যান্ট স্থাপন তার মধ্যে অন্যতম। পর্যায়ক্রমে আরো প্রকল্প হাতে নেয়া হবে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে দেশে বর্তমানে এলপিজির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৫ লাখ টন (১ টন সমান ১ হাজার কেজি)। ২০১১ সালে এ চাহিদা ছিল ৩ লাখ টন। এলপিজির প্রধান উপাদান বিউটেন ওপ্রোপেন। দেশীয় উত্স থেকে এ উপাদান সংগ্রহ করে এলপিজি উত্পাদন করে সরকারি প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি (ইআরএল) ও বেসরকারি সংস্থা সুপার পেট্রোকেমিক্যাল।দেশীয়ভাবে উত্পাদিত এ এলপিজির পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। গত অর্থবছরে ইআরএল ১০ হাজার টন এলপিজি উত্পাদন করে। বেসরকারি কোম্পানিগুলো বিউটেন ও প্রোপেন আমদানি করে এলপিজি উত্পাদনের পরিমাণ বাড়ালেও তা বাজার চাহিদার পুরোপুরি মেটাতে পারছে না। চাহিদা ও জোগানেরপার্থক্যের সুযোগে গুরুত্বপূর্ণ এ জ্বালানি পণ্যের মান ও মূল্য নিয়ে বাজারে এক ধরনের নৈরাজ্য চলছে। এছাড়া সরকার নতুন আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। ভবিষ্যতেবিদ্যমান আবাসিক গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে। ফলে এলপিজির চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় পায়রা বন্দর এলাকায় ২ লাখ মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি এলপিজি আমদানি, মজুদ ও বোতলজাতকরণ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে। পাশাপাশিস্ট্রাটেজিক অয়েল মজুদাগার নির্মাণ করবে বিপিসি।
BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: