সুইপার পদে চাকরি দেওয়ার নামে ২১ লাখ টাকা আত্মসাৎ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পরিচ্ছন্নতা কর্মী (সুইপার) নিয়োগের ভুয়া নিয়োগপত্র দেখিয়ে পাঁচ জনের কাছ থেকে ২১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইয়াসিন বাপ্পী নামে এক প্রতারক গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের একটি টিম বংশাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) জিসানুল হক জিসান। তিনি বলেন, ইয়াসিন বাপ্পীর প্রতারণার শিকার পাবেল দাস নামে এক ভুক্তভোগী মঙ্গলবার বংশাল থানায় একটি মামলা করেন। ঐ মামলার আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামি একটি প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা আত্মসাত্ করাই আসামির পেশা। মামলার বাদী তার পূর্বপরিচিত মানিক লাল নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে আসামির সঙ্গে পরিচিত হন। পরিচয়ের এক পর্যায়ে আসামি বাদীকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সুইপার/পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেয়। একই সঙ্গে আসামি মামলার বাদীকে জানায়, তার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিব থেকে শুরু করে প্রশাসনের সব কর্মকর্তার সুসম্পর্ক রয়েছে। চাকরি পেতে হলে তাকে (আসামি) ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। আসামির কথা বিশ্বাস করে তাকে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেয় পাবেল দাস। এভাবে পাবেল দাসসহ আরো চার ভুক্তভোগীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মোট ২১ লাখ টাকা আত্মসাত্ করে আসামি।
ভুক্তভোগী পাবেল দাস মামলার এজাহারে অভিযোগ করে জানান, ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর ইয়াসিন বাপ্পীর বাসায় গিয়ে তিনি ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা সুইপারের চাকরির জন্য দেন। পরে ইয়াসিন বাপ্পী তাকে একটি নিয়োগপত্র দেন, যেটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিবের সিলসহ স্বাক্ষরিত। পরে নিয়োগপত্র অনুযায়ী ২০২০ সালের ২৬ জুন তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অফিসে সুইপার পদে কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন ইয়াসিন বাপ্পী আসেনি। তার মতো আরো চার ভুক্তভোগী ইয়াসিন বাপ্পীর অপেক্ষায় বসে রয়েছে।
পরে ইয়াসিন বাপ্পী না আসায় পাবেল দাসসহ বাকি চার ভুক্তভোগী সিটি করপোরেশনের অফিসে গিয়ে নিয়োগপত্র দেখালে তারা বুঝতে পারেন নিয়োগপত্রটি ভুয়া। জাল সিল ও জাল স্বাক্ষর দিয়ে ইয়াসিন বাপ্পী তাদের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়েছে। পরে পাবেল দাস ইয়াসিন বাপ্পীর কাছে তার টাকা ফেরত চান। তখন সে (আসামি) তাকে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি চেক দেয়। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের চেক নিয়ে বংশাল শাখায় যোগাযোগ করেন ভুক্তভোগী। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঐ অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই বলে জানায়। পরে আবারও ইয়াসিন বাপ্পীর কাছে ভুক্তভোগী টাকা দাবি করেন। তখন টাকা না দিয়ে পাবেল দাসকে মেরে ফেলার হুমকি দেন আসামি।