শিরোনাম

South east bank ad

'আফসোস দুঃখ আমার পিছু ছাড়ল না'

 প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

'আফসোস দুঃখ আমার পিছু ছাড়ল না'

রাসেল আহমেদ (ময়মনসিংহ)
৭৯ বছরের জীবনে সুখের মুখ দেখলাম না। ছোট বেলা থেকে পেটে ভাতে অন্যের বাড়িতো কাজ করেছি। আজ জীবনের পড়ন্ত বেলায়ও মানুষের কাছে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার টানতে হচ্ছে। কিন্তু কিছুদিন আগে পায়ের রিক্সা চালাতাম এখন আর আগের মতো শরীলে শক্তি পাই না তাই রিক্সা টানতে পারি না।

আফসোস, দুঃখ আমার পিছু ছাড়ল না। এভাবেই জীবনভর কষ্টের কথা জানালেন ময়মনসিংহ সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের কলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নূর আলী।সারাটা জীবন দুঃখে-কষ্টে সংসার টেনে আনলেও ৭৯ বছর বয়সে এসে এখন থাকার ঘর ও দুবেলা খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।

নূর আলী বলেন,ছোট বেলা থেকেই কষ্টের সাথে বসবাস, আমার আগের সন্তান বড় হয়ে এখন ঢাকা থাকে স্ত্রী নিয়ে আমার খোঁজ খবর নেয় না।দ্বিতীয় স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে অন্যের বাড়িতে থাকি। কিছুদিন আগে রিক্সা চালাতাম এখন আর আগের মত শক্তি নাই তাই রিক্সা চালাতে পারি না। এখন ভিক্ষা করে দিন যাচ্ছে।
ভিক্ষা করে দৈনিক ৩০০ টাকার মতো থাকতো কিন্তু সরকার লকডাউন ঘোষণার পর থেকে বাড়ী থেকে ঠিক মত বের হতে পারি না। কালকে গিয়ে ছিলাম পাড়া গুরতে এখন আর আগের মতো মানুষের চলচল নাই। তাই আগের মতো ইনকাম নাই। এখন যেন আর চলতো পারছি না। তিনি আরো বলেন, আমার কোন জমি নেই অন্যের জায়গায় বসবাস করি। আজ পর্যন্ত নিজের একটা ঘর বানাতে পারলাম না। ঝড়বৃষ্টির দিনে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়। সরকারের কাছে একটা ঘরের আবেদন করছি; একটা ঘর পেলে জীবনের শেষ দিনগুলোতে একটু স্বস্তি পেতাম।

নূর আলীর স্ত্রী খালেদা খাতুন বলেন, দুঃখের সাথেই যেন আমাদের বসবাস।সেই ছোট বেলা থেকে বাপ,মার সংসারের বোঝা হয়ে থাকতাম ভেবেছিলাম হয়তো স্বামীর সংসারে হয়তো সুখের দেখা পাবো।কিন্তু তা আর ভাগ্য নেই। স্বামী আগের পায়ের রিক্সা চালাত এখন আর চালাতে পারে না। এখন সে মানুষের দুয়ারে হাত পেতে যা পেতা তা দিয়ে কোন রকম সংসার চলত। একখ তো করোনার জন্য ঘড় থেকে বের হতে পারে না। এখন রোজার মাস মানুষ রোজার মাসে কত কি খায় আমার তো সে কপাল নয়।
এখন আবার কাল বৈশাখ ঝড় তুফানের দিন আমাদের তো ভালো কোন ঘড় নেই. থাকি অন্যের জায়গায়। স্বামী ও এক ছেলে সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে আছি।

প্রতিবেশী শরিফা খাতুন বলেন, তার কোন জমি- জমা নেই থাকে অন্যের জায়গায়।তারা এলাকার সবচেয়ে দুঃখী মানুষ আগে মানুষের কাজ কাম করত এখন আর করতে পারে না। এখন ভিক্ষা করে সংসার চলে কোন রকম।

প্রতিবশী খোদেজা বলেন,তার বড় কোন সন্তান নেই, বাপ ভাই কেউ নেই থাকে অন্যের জায়গায় থাকে সরকার যুদি তাদের একটা ঘড় দিতে তাহলে হয়ত শেষ বয়সে সুখে একটু থাকতে পারত।

দাপুনিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের (মেম্বার) লাল মিয়া বলেন,নূর আলী অনেক দিন যাবত আমার ওর্য়াডে বসবাস করছি,সে একদম।গরীব থাকার মত কোন ঘড় নাই। তাদের থাকার একটি ঘর দরকার।নূর আলী সরকারি একটি ঘর দেওয়ার দাবি জানাই।

১০ নম্বর দাপুনিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম হাফিজ বলেন,নূর আলী গরীব মানুষ তার থাকার মত কোন জায়গা জমি নেই। দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেও ভাগ্য বদলাতে পারেননি। আমি চেষ্টা করব তাকে সাহায্য করার জন্য।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)মোঃসাইফুল ইসলাম বলেন, এখন তো শতভাগ ভাতা কাযক্রম চলছে।আমি বিষটি শুনলাম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: