করোনার জন্য উদ্ভূত পরিস্থিতি মেনে নেয়া ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই
মির্জা ইয়াহিয়া:
করোনাভাইরাস সারা পৃথিবীকে লকডাউনের মুখে ফেলেছে। প্রতিদিন শুধু আক্রান্ত ও মৃত্যু হওয়ার খবর দেখি। জীবন তবু থেমে নেই। সংসারের চাকা ঘুরছে। তেমনি সক্রিয় অফিস-আদালত। করোনার ধাক্কার মধ্যেও জুন মাস এসেছে। আর ঘোষণা করা হয়েছে নতুন অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। ২০২০-২০২১ অর্থবছর কেমন যাবে- তা আন্দাজ করা গেল জাতীয় সংসদে মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের উপস্থাপন করা বাজেটে।
আমি যেহেতু ব্যাংকিং সেক্টরে কর্মরত। স্বাভাবিক কারণেই এই সেক্টর নিয়ে আমার আগ্রহ বেশি। একাধিক মিডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কভিড-১৯-ধাক্কা সামাল দিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল করতে চায় সরকার। তাই বাজেটের ঘাটতি সামলাতে প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা নেয়া হবে ব্যাংক থেকে। এই অর্থ চলতি অর্থবছরের তুলনায় নাকি দ্বিগুণ। অন্যদিকে ব্যাংকে গ্রাহকের জমা করা টাকার দিকেও বাড়তি নজর দিচ্ছে সরকার। নতুন অর্থবছরে ব্যাংকে যাদের ব্যাংক হিসাবে ১০ লাখ টাকার বেশি জমা আছে বা এর চেয়ে বেশি হয়ে যাবে- তাদের বাড়তি কর দিতে হবে। এতে ব্যাংকে আমানত ধরের রাখার একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে।
এদিকে করোনাভাইরাস সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মতো ব্যাংকিং সেক্টরেও আঘাত হেনেছে। আচমকা আসা এই মহামারি সব হিসাবনিকাশ উলটপালট করে দিয়েছে। অথচ এই বছর ব্যাংকিং সেক্টর প্রস্তুতি নিচ্ছিলো নয়-ছয় সামলানোর জন্য। অর্থাৎ ব্যাংকঋণে সর্বোচ্চ ৯ ভাগ সুদ আর আমানতের বিপরীতে সঞ্চয়ে সর্বোচ্চ ৬ ভাগ মুনাফা। অর্থমন্ত্রী এ বিষয়েও কথা বলেছেন। তিনি ইঙ্গিত করেছেন বিনিয়োগ বাড়াতেই এটা করা হয়েছে। বিনিয়োগ বাড়লে ব্যাংকিং সেক্টর একদিক দিয়ে লাভবান হবে। কারণ তখন বিনিয়োগকারী তথা ঋণগ্রহিতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু বর্তমানে করোনার ধাক্কায় বিনিয়োগ স্থবির হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতি কখন কাটবে আমরা কেউ জানি না। করোনার জন্য উদ্ভূত পরিস্থিতি মেনে নেয়া ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। এ অবস্থায়ও মাননীয় অর্থমন্ত্রী একটি বাজেট উপস্থাপন করেছেন। তার জন্য তাকে অভিনন্দন।
(মির্জা ইয়াহিয়া,সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং জনসংযোগ ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান। সিটি ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ, এর ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া।)
