দু’দিনব্যাপী এশিয়ান ব্যাংকিং সামিট শুরু

আর্থিক খাতের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় নতুন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) শুরু হয়েছে দু’দিনব্যাপী এশিয়ান ব্যাংকিং সামিট-২০১৫।
রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে এ সামিটের আয়োজন করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নিমাই ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্টস।
সামিটে ‘এশিয়ান ব্যাংকিং সামিট-২০১৫’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এতে বাংলাদেশের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী বলেন, আর্থিক খাতে কিছু কিছু ঝুঁকির আবির্ভাব হচ্ছে। এসব ঝুঁকি ব্যাংকগুলোকে তাদের কৌশল দিয়ে মোকাবেলা করতে হবে।
সুর চৌধুরী আরও বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক কিছুর সংস্কার করেছে। কারণ, আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকও এসব নিয়ম-কানুন বাস্তবায়ন করে থাকে।
তিনি বলেন, এসব নিয়ম-কানুন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিশ্চিত করা গেলে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বড় ইস্যু হচ্ছে ব্যাংকের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখা।
সামিটে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ।
সালমান এফ রহমান বলেন, সব ধরনের ব্যবসাতেই ঝুঁকি আছে। তবে ব্যাংক ব্যবসার জন্য ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এছাড়া টেক্সটাইল, পাট ও আবাসন শিল্পের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করা না গেলে এ খাত টিকে থাকতে পারবে না।
পরিচালন, আমানত, পরিদর্শন, মূলধন তারল্য ও অংশীদারিত্বে ঝুঁকি বৃদ্ধি নিয়ে একটি তথ্যচিত্র বিশ্লেষণ করেন ব্যাংক অব আমেরিকার সাবেক এক্সিকিউটিভ ও দিব্যা চান্দ্রা রিস্ক প্রিন্সিপাল’র উপদেষ্টা আম্বি ভেঙ্কটেশ্বরন।
‘আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবণতা ও আমাদের প্রস্তুতি’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা করেন নিমাই ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্টস’র ফাউন্ডার পার্টনার পঙ্কজ মুন্দ্রা, দিব্যা চান্দ্রা রিস্ক প্রিন্সিপালের উপদেষ্টা আম্বি ভেঙ্কটেশ্বরন, স্কয়ার সার্কেলস’র সিইও ও লিড ট্রেইনার সতীশ মান্ডোরা, নিমাই’র ম্যানেজিং পার্টনার নিসর্গ দুগাড় এবং রয়্যাল ব্যাংক অব স্কটল্যান্ড, ভারতের প্রাক্তন সিইও মীরা স্যানাল, বিআইএসি’র চিফ এক্সিকিউটিভ এম এ রুমী আলী।
মীরা স্যানাল বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালের জন্য একটি স্পষ্ট এবং সুদূরপ্রসারী ‘ভিশন’ তৈরি করেছে। এশিয়ান ব্যাংকিং সামিটে ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের অংশীদাররা একে অপরের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে-আলোচনা করতে পারবেন।
এম এ রুমী আলী বলেন, এটা নিশ্চিত, এ সামিটের মাধ্যমে জ্ঞান এবং ব্যাংক ডাটা বৃদ্ধি পাবে। যা আরও শক্তিশালী একটি আর্থিক ব্যবস্থা তৈরি করে বর্তমানকে রক্ষা করা এবং সুন্দর আগামী গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
বক্তারা পরিবর্তনশীল প্রবণতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্য বৈশ্বিকভাবে মানানসই ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিদ্যমান ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
আঞ্চলিক ব্যাংকিংয়ে অর্থনৈতিক ধারা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি নিরাপত্তা রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, আইটি সিকিউরিটি এবং সম্মতি ইস্যু নিয়ে দু’দিনের এশিয়ান ব্যাংকিং সামিট শেষ হবে বুধবার (০৪ নভেম্বর) ।