ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান লুকিয়ে রাখতেই ইতিহাস বিকৃত করা হয়: শিক্ষামন্ত্রী
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। বিকৃত ইতিহাসে একুশকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একুশের আগেও যে ভাষা আন্দোলন হয়েছে, সংগ্রাম হয়েছে- সেটিকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে লুকিয়ে রাখতেই এটি করা হয়েছিল।
গতকাল (২৫ ফেব্রুয়ারি) শুক্রবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মহান শহিদ ও মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ভাষা আন্দোলন আমাদের সব অনুপ্রেরণার উৎস। ভাষা আন্দোলনই আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে প্রতিরোধ করতে হয়, কীভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আগুন ঢেলে দিতে হয়।
পাকিস্তানিরা বাংলাকে গভীরভাবে অপছন্দ করতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের হীনমন্যতার কারণেই এটি করতো। কারণ ভাষা হচ্ছে সংস্কৃতির আধার। এটিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারলেই সংস্কৃতি বাধাগ্রস্ত হবে। সেই চিন্তা থেকেই তারা এটি করেছে।
সর্বস্তরে বাংলা ভাষা নিশ্চিতের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে শিক্ষা যে কতোমুখি তার শেষ নেই। ভাষা শেখার গোড়াতেই গলদ। আমরা এখন ভাষাটাকে রপ্ত করতে চেষ্টা করছি। একমুখী শিক্ষা চালুর চেষ্টা করছি নতুন কারিকুলামে। যে যে মাধ্যমে পড়ুক সবাই যেন একটি জায়গা পর্যন্ত একই ধারার শিক্ষা লাভ করতে পারে।
সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, পাকিস্তান-ভারত সৃষ্টির সঙ্গে বাংলাদেশ সৃষ্টির রাজনৈতিক ইতিহাস ভিন্ন। বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে সাংস্কৃতিক আলোড়ন, লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। বঙ্গবন্ধুর সেই সাংস্কৃতিক জাগরণ, রাজনৈতিক লড়াই, এরপর সমাজ গঠনের জায়গায় দ্বিতীয় বিপ্লব ঘোষণা করেছিলেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, মাতৃভাষা যেন আরো শুদ্ধ হয়, তোমাদের দিয়ে আমাদের আগামী দিনের লেখক, কবি, সাহিত্যিক যেন সৃষ্টি হয়। এ প্রযুক্তির যুগে তুমি সবকিছু করবে। মাতৃভাষার মর্যাদাকে আপোষহীনভাবে সুউচ্চ রাখতে বাংলায় লিখতে এবং পড়তে হবে ।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মীজানুর রহমান।
আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুড়িগ্রাম ল’ কলেজের অধ্যক্ষ এস মে আব্রাহাম লিংকন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য স্থপতি প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার।