শিরোনাম

South east bank ad

বাকৃবিতে ৬ বছর ধরে সমাবর্তনের অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা

 প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

মো. নজরুল ইসলাম, (ময়মনসসিংহ):

উপমহাদেশের কৃষি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)তে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে অষ্টম সমাবর্তনের অপেক্ষায় রয়েছেন শিক্ষাক্ষার্থীরা। সর্বশেষ ২০১৬ সালে সপ্তম সমাবর্তনের পর একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও অষ্টম সমাবর্তন এখনো আলোর মুখ দেখেনি। এ নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ সমাবর্তনের অপেক্ষায় থাকা ছয় হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দ্রুত সমাবর্তন আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ৬০ বছর ইতোমধ্যে পার করলেও মাত্র সাতটি সমাবর্তন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। অথচ একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর জন্য সমাবর্তন চরম আকাঙ্খার এক নাম। পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের পর অর্জিত ডিগ্রির সনদপত্র গ্রহণের বর্ণাঢ্য আয়োজনে সামিল হতে চাওয়া প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বপ্ন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৮ সালের ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন চ্যান্সেলর আব্দুল মোনেম খানের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় বাকৃবির প্রথম সমাবর্তন। চার বছর পর আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দ্বিতীয় সমাবর্তন হয় ১৯৭২ সালের ৩১ ডিসেম্বর, যা স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম। এরপর বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তৃতীয় সমাবর্তন হয় ১৯৯৪ সালের ৫ জুন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চতুর্থ সমাবর্তন হয় ১৯৯৭ সালের ২০ ডিসেম্বর, ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বে পঞ্চম সমাবর্তন হয় ২০০৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি, প্রয়াত চ্যান্সেলর মো. জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে ২০১১ সালের ৮ মার্চ ষষ্ঠ এবং ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বর্তমান রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় সপ্তম সমাবর্তন।

তবে ২০১৫ সালে পাস করা শিক্ষার্থীদের সপ্তম সমাবর্তনে অন্তর্ভূক্ত না করায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করে ২০১০-১১ সেশনের শিক্ষার্থীদের মাঝে। সর্বশেষ সমাবর্তনে ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভূক্ত না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট হওয়া সত্ত্বেও তারা সমাবর্তন পাননি। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরও নতুন পাঁচটি ব্যাচ স্নাতক ডিগ্রি শেষ করলেও তাদের কেউ সমাবর্তন পায়নি।

২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ থেকে পাস করেছেন মতিউর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছরই সমাবর্তনের আয়োজন করে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কথা না হয় বাদই দিলাম। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর তো দূরের কথা বেশ কয়েক বছরেও একবার সমাবর্তন হয় না। দীর্ঘ ৬০ বছরের পথচলায় বাকৃবিতে মাত্র সাতবার সমাবর্তন হয়েছে। এই ব্যর্থতা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। যথাযথ উদ্যোগ আর সদ্বিচ্ছা থাকলে প্রতি বছরই সমাবর্তন আয়োজন করতে পারত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ভেটেরিনারি অনুষদের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. মোস্তফা কামাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাজীবন শেষে ছাত্র-ছাত্রীদের একটি কাঙ্খিত অনুষ্ঠানের নাম সমাবর্তন। ২০১২ সালে ভর্তি হওয়ার পর শুধু একবার ২০১৬ সালে এটা হতে দেখেছি। অন্যান্য সব বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন আয়োজন করলেও আমরা বারবার দেখেছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব। বাংলাদেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হয়ে এটা আমাদের জন্য যেমন কষ্টের তেমনি লজ্জার। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন অতি দ্রুত সমাবর্তন না পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি সমাবর্তন আয়োজন করবে এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।

এস এম ইসমাইল মুসা নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যর্থতার মধ্যে অন্যতম হলো তার গ্রাজুয়েটদের জন্য সময়মতো সমাবর্তন আয়োজন না করা। যারা স্নাতক শেষ করে তারা কিন্তু এই সমাবর্তনের জন্য চাতক পাখির মতো তাকিয়ে থাকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এতটা উদাসীন ৬০ বছরে মাত্র সাতবার সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারছে।

বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের মতো আমি নিজেও চাই দ্রুত সমাবর্তন হোক। আমি এটা আয়োজন নিয়ে আলোচনাও করেছিলাম। করোনা মহামারির কারণে আমরা এটা নিয়ে পরে আর এগোতে পারিনি। আশা করছি শিক্ষার্থীদের এ দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারব।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: