শিরোনাম

South east bank ad

বগুড়ায় বিজিবির গুলিতে নারীসহ নিহত চার

 প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া):

বগুড়ার গাবতলীর বালিয়াদীঘি ইউনিয়নে ব্যালট বাক্স উপজেলা সদরে নেয়াতে বাধা দেয়ার সময় সংঘর্ষে বিজিবির গুলিতে চারজন নিহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের মধ্যে একজন নারী রয়েছেন। তিনি এক মেম্বার প্রার্থীর এজেন্ট হিসেবে কেন্দ্রে দায়িত্বরত ছিলেন।

বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার বালিয়াদিঘী ইউনিয়নের কালাইহাটা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের কথা স্বীকার করলেও প্রশাসন জানিয়েছে মরদেহগুলো তাদের হাতে এখনও আসেনি। স্থানীয় ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এই চারজনের নাম পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন, “খোকনের স্ত্রী (মেম্বার প্রার্থীর এজেন্ট) কুলসুম আক্তার, ‍মকবুল হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন, মৃত ইফাত উল্লাহর ছেলে আব্দুর রশিদ ওখোরশেদ আলী। নিহত চারজনই কালাইহাটা গ্রামের বাসিন্দা।”

স্থানীয়রা জানান, ‍“বুধবার বিকেলে ভোট শেষে গণনা না করে ওই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ব্যালট বাক্স উপজেলা সদরে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু নৌকা মার্কার কর্মী-সমর্থকেরা এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।”

তারা কেন্দ্রেই ভোট গণনা করে ফলাফল ঘোষণার দাবি জানান। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সরে দেয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশ, বিজিবি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুর করে। সহিংসতায় আহত তিনজন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তারা হলেন, কালাইহাটা গ্রামের আব্দুল্লাহ, রাকিব ও শহিদউদ্দিন।

এদের মধ্যে আব্দুল্লাহর সারা শরীরে ছররা গুলির আঘাতের দাগ। তিনি জানান, ৫টার দিকে ভোট গননা না করে ব্যালট বাক্স নিয়ে যাওয়ার কথা ওঠে। এ সময় প্রার্থীর সমর্থকরা শ্লোগান দিচ্ছিলেন। এর কিছু পরেই হঠাৎ দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়। তখন বিজিবিরা গুলি শুরু করলে আমার গায়ে লাগে। আমি এরপর আর কিছু বলতে পারি না।

এই ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইউনুছ আলী ম-ল বলেন, “ভোট গ্রহণ শেষে ব্যালট পেপার কেন্দ্রে গণনা না করেই উপজেলা পরিষদে নিয়ে যেতে ধরেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্টেট্র আসিফ আহম্মেদ। ওই সময় আমার কর্মী-সমর্থকরা কেন্দ্রেই ভোট গণনা করতে বলেন। কিন্তু এরপরেও ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আহমেদ ব্যালট উপজেলা পরিষদে নিয়ে যেতে ধরেন।”

তিনি আরো বলেন, “এ সময় আমার কর্মী-সমর্থকরা বাধা দিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলিবর্ষণ করেন। তাদের গুলিতে চারজন মারা যান। ওই চারজনই আমার কর্মী সমর্থক ছিলেন।”

গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রওনক জাহান বলেন, “কালাইহাটা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ শেষ হলেও নৌকার প্রার্থীর সমর্থকেরা গণনায় বাধা দেন। অন্য কেন্দ্রের ভোট গণনা শেষে তাঁরা ভোটের ফলাফল ঘোষণা করতে বলেন। এতে আপত্তি জানালে নৌকার প্রার্থী ইউনুছ আলী ফকিরের সমর্থকেরা ভোটকেন্দ্রে হামলা চালান। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নৌকার কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। নৌকার কর্মী-সমর্থকেরা ইউএনওর গাড়ি ছাড়াও পুলিশ ও বিজিবির মোট চারটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেন।”

হামলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে থাকা শাজাহানপুরের ইউএনও আসিফ আহমেদ ছাড়াও বিজিবি-পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন।
ইউএনও রওনক জাহান দাবি করেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়। তবে কতজন হতাহত হয়েছেন, তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।

জানতে চাইলে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী বুধবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বলেন, বালিয়াদীঘির কালাইহাটা কেন্দ্রে সংঘর্ষে চারজন মারা গেছেন। তাদের লাশ এখনও আমাদের হাতে আসেনি। লাশ সংগ্রহ করে আমরা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠাব।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, “রাতে গুলিবিদ্ধ দুজনকে আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন আবদুল (৪০) এবং রাকিব (১৬)।”

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: