বেড়েছে অমিক্রন সংক্রমণের হার
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
সরকারি হিসাবেই গত কয়েক দিনে করোনায় সংক্রমণের হার বেড়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার ডিসেম্বরের শুরুতে যেখানে দেড় শতাংশের কম ছিল, ডিসেম্বরের শেষে এসে দেখা যাচ্ছে সেই হার ২ দশমিক ৭৪ শতাংশে এসে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে করোনায় মৃত্যুর হারও বাড়ছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫১২ জন। মারা গেছেন দুজন। যদিও আগের দিন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০৯, মারা যান ৭ জন। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সংক্রমণের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। পরীক্ষা কম হচ্ছে বলেই সংক্রমণের সংখ্যা এত কম। সরকারি হিসাবে অমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ১০ জন।
করোনা সংক্রমণের বর্ধিত হার ও সংখ্যা জনমনে কিছুটা হলেও ভীতি তৈরি করেছে। এর কারণ প্রতিবেশী ভারতসহ বিভিন্ন দেশে করোনার নতুন ধরন অমিক্রনের প্রাদুর্ভাব। ইউরোপ, আমেরিকায় এ ধরন বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বাংলাদেশ এখনো স্বস্তিকর অবস্থায় আছে; কিন্তু আমাদের নিশ্চিন্ত হলে চলবে না।
যেসব দেশে করোনার সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বেড়েছে, সেসব দেশে অমিক্রনও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষার পরই জানা সম্ভব কার দেহে কোন ধরনের করোনার সংক্রমণ ঘটেছে। এ পরীক্ষা বাংলাদেশে খুব কমই হয়েছে, বেশি পরীক্ষার সক্ষমতাও আমাদের নেই।বিজ্ঞাপনবিজ্ঞাপন
এ অবস্থায় সরকার ও জনগণের করণীয় ঠিক করা জরুরি। করোনা সংক্রমণ রোধে এখনো রক্ষাকবচ হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, যতটা সম্ভব জনসমাগম ও ভিড় এড়িয়ে চলা। দৈনন্দিন কাজে যেসব স্থানে মানুষকে যেতেই হয়, সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে বাধ্য করা। এ ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্ব আছে। কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে এটি সম্ভব নয়। এ জন্য জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে; বিশেষ করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও তরুণদের। অতীতেও দেখা গেছে, যেসব কর্মসূচিতে জনগণকে সম্পৃক্ত করা যায়, সেখানে বেশি সাফল্য আসে।
সরকার টিকা কর্মসূচি জোরদার করেছে, এটি ভালো সংবাদ। নিয়মিত টিকা কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বিত টিকা কর্মসূচিও শুরু হয়েছে; এতে কম সময়ে অনেক বেশি মানুষ টিকা পাবেন। সেই সঙ্গে বুস্টার ডোজ দেওয়াও অব্যাহত আছে।
এ অবস্থায় সরকারের প্রথম কর্তব্য হবে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোতে টিকা কর্মসূচি জোরদার করা। সরকারের দাবি, যথেষ্টসংখ্যক টিকা তাদের হাতে মজুত আছে। সে ক্ষেত্রে টিকাদানে সমতা আনা বা দেশের অধিকাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা কঠিন নয়। একই সঙ্গে নতুন ধরন যাতে দেশের ভেতরে না ঢুকতে পারে, সে জন্য স্থল, বিমান ও বন্দরগুলোতে নজরদারি বাড়াতে হবে। যাঁরাই বাইরে থেকে আসবেন, বাধ্যতামূলকভাবে তাঁদের করোনা পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে। ডেলটা ধরন প্রবেশের সময় নজরদারি ও পরীক্ষায় যে শিথিলতা ছিল, তার পুনরাবৃত্তি কাম্য হতে পারে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদেরও বুঝতে হবে কারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যেমন অন্যদের করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে, আবার কেউ এ বিধি লঙ্ঘন করলে সমূহ সর্বনাশ হতে পারে।